ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দিলেও গোধরা কাণ্ডের অভিযুক্তদের কোনওরকম ছাড় দিতে নারাজ বিজেপি শাসিত গুজরাট সরকার। সুপ্রিম কোর্টে গোধরায় (Godhra) সবরমতী এক্সপ্রেসে পাথর ছোঁড়ায় অভিযুক্তদের জামিনের তীব্র বিরোধিতা করল গুজরাট সরকার। আদালতে তাঁরা জানিয়ে দিল গোধরার মতো ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের কোনওভাবেই ছাড় দেওয়া যায় না।
২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গুজরাটের গোধরা স্টেশনে সবরমতী এক্সপ্রেসের (Sabarmati Express) এস সিক্স কামরায় অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়। এদের অনেকেই ছিলেন করসেবক। অযোধ্যা থেকে ফেরার পথে তারা ওই ঘটনার শিকার হন। তার জেরে সমস্ত গুজরাটে (Gujarat) ছড়িয়ে পরে হিংসা। ঠিক তার পরের দিন গান্ধীনগরের পালিয়াদ গ্রামে জ্বলে ওঠে সাম্প্রদায়িক হিংসার আগুন। আক্রান্ত হয় বহু সংখ্যালঘু পরিবার। অভিযোগ ছিল যে, গোধরার সে দিনের ঘটনাটি পরিকল্পিত ভাবে ঘটিয়েছিল অভিযুক্তরা। ট্রেনের ওই কামরায় আগুন লাগানো হয়েছিল। এবং ট্রেনটি লক্ষ্য করে পাথরও ছোঁড়া হয়েছিল।
দাঙ্গার আবহে নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন গুজরাট সরকার বেশ কিছু অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। ২০১১ সালে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ৬৩ জনকে নির্দোষ ঘোষণা করে বিশেষ সিট আদালত। গোধরা মামলার শুনানি শেষ হয় ২০১৫ সালে। দোষী সাব্যস্ত করা হয় ৩১ জনকে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ফের মামলা হয়। দোষী সাব্যস্ত ৩১ জনের মধ্যে ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বাকিদের আজীবন কারাবাসের সাজা হয়। তবে ওই ১১ জনের মৃত্যুদণ্ডও ২০১৭ সালে রদ করে দেওয়া হয়। তাঁদের আজীবন কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত সব অভিযুক্তই জেলবন্দি।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) যারা পাথর ছোঁড়ায় অভিযুক্ত, তারা জামিনের আবেদন করেন। সেই মামলার ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড় এবং বিচারপতি পি এস নরসিমার বেঞ্চ এ বিষয়ে গুজরাট সরকারের মত জানতে হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এরা যেহেতু ১৭-১৮ বছর জেলে কাটিয়েছে, তাই এদের জামিন দেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু গুজরাট সরকার এদের জামিনের প্রবল বিরোধিতা করেছে। এখানেই প্রশ্ন, গুজরাট সরকার যদি বিলকিসের (Bilkis Bano) নৃশংস ধর্ষকদের মুক্তি দিতে পারে, তাহলে গোধরা কেন বাকি থাকবে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.