শুভঙ্কর বসু: রাতে তো বটেই, এমনকি দিনের বেশিরভাগ সময়ও কাস্টমারের ভিড়ে সরগরম থাকত এলাকা। কিন্তু মারণ ভাইরাসের রক্তচক্ষুতে ‘রেড লাইট এরিয়া’ বা যৌনপল্লিগুলিতে পা ফেলতে সাহস করছেন না কেউই। ধু-ধু করছে পাড়া। রুজি-রোজগার পুরোপুরি বন্ধ। ফলে একরকম ভয়াবহ সময় কাটাচ্ছেন যৌনকর্মীরা (Flesh Traders)।
এই পরিস্থিতিতে তাঁদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। গোটা দেশজুড়ে অন্তত ৯ লক্ষ যৌনকর্মী রয়েছেন। তাঁদের সকলের পরিচয় যাচাইয়ের জোর না দিয়ে অবিলম্বে যৌনকর্মীদের খাদ্যসামগ্রী, আর্থিক সহায়তা প্রদানের দায়িত্ব কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির কাঁধে অর্পণ করল সুপ্রিম কোর্ট। এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শীর্ষ আদালতের তরফে। করোনা, লকডাউনে যৌনকর্মীদের দুর্দশার কথা জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি। সেই জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, এই মহামারী (Coronavirus) পরিস্থিতিতে অন্য পেশার মত এই পেশা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকেই যৌনকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। পরিচয় যাচাইয়ে জোর না দিয়ে অবিলম্বে তাঁদের রেশনে শুকনো খাবার, আর্থিক সহায়তা এবং মাস্ক স্যানিটাইজার, সাবানের মত প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
দুর্বারের তরফে এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে দাবি করা হয়, সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যৌনকর্মীদেরও মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। কিন্তু স্রেফ সামাজিক কলঙ্ক এবং প্রান্তিককরণের কারণে এই পরিস্থিতিতেও তাঁরা সাহায্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মামলাটি দায়েরের আগে দুর্বার গোটা দেশে যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পরামর্শ গ্রহণ করে যারা কোভিড পরিস্থিতিতে যৌনকর্মীদের পরিস্থিতি বুঝতে একাধিক গবেষণা এবং সমীক্ষা চালিয়েছে। ৫ রাজ্যের অন্তত ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৫০ জন যৌনকর্মীর উপর ‘তারাস’ নামে একটি সংগঠনের করা সমীক্ষার তথ্য উল্লেখ করা হয়েছিল মামলার আবেদনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.