সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের মানবিকতার জয় হল। ১০ বছরের সানিয়ার আইপিএস হওয়ার স্বপ্ন সফল করতে শল্য চিকিৎসার খরচ তুলে দিল জনগণ। সংগৃহীত অর্থমূল্য ২০ লক্ষ টাকা। বাকি ছিল সমবয়সী ছোট্ট হৃদয়ের। তাও জোগাড় হল। সোমবার প্রায় সানিয়ার বয়সী একটি শিশুর ব্রেনডেথ হল লীলাবতী হাসপাতালে। এনজিও মারফৎ সেই হৃদপিণ্ড এসে পৌঁছল মুম্বইয়ের ফর্টিস হাসপাতালে। সফল অস্ত্রোপচারে সুস্থ জীবন ফিরে পেল সানিয়া। মেয়ের এই সুস্থতায় সাহায্যকারীদের ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি সরফরাজ। ধন্যবাদ দিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকেও। বৃহস্পতিবারের আগে সানিয়ার সুস্থতা নারীদিবসের সেরা প্রাপ্তি হিসেবেই দেখছেন সরফরাজ।
মেয়ের দীর্ঘ অসুস্থতায় চিন্তিত ছিলেন সরফরাজ। গত ১৯ ডিসেম্বর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, সানিয়ার হৃদপিণ্ডের প্রতিস্থাপন জরুরি। কেন না মেয়ের হৃদযন্ত্রটি বেড়েই চলছে। বয়স অনুযায়ী সেই আকৃতি অনেকটাই বেশি। এরজন্য ২০ লক্ষ টাকা খরচ পড়বে। একই সঙ্গে দরকার সমবয়সী কোনও হৃদযন্ত্র। চিত্রকরের আর্থিক সচ্ছলতার কাছে টাকার অঙ্ক অনেকটাই বেশি তাই প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নেমে পড়েন তিনি। তাতে লেখা, ‘মেয়েকে বাঁচাতে আমায় সাহায্য করুন। আইপিএস অফিসার হওয়ার জন্য তার একটি হৃদযন্ত্রের প্রয়োজন।’ প্ল্যাকার্ড হাতে মেরিন ড্রাইভ, মন্ত্রালয় ও ইন্ডিয়া গেটের আশপাশে ঘুরতে শুরু করেন সরফরাজ। মেয়েকে সুস্থ করতে তখন রাতদিন এক করে ফেলেছেন তিনি। সন্তানকে বাঁচাতে বাবার আর্তি বিফলে যায়নি। জনে জনে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কেউ নগদ অর্থ ধরিয়ে দিয়েছেন সরফরাজের হাতে। কেউ বা চেক। কেউ বা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টেই পাঠিয়ে দিয়েছেন সাহায্য। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফ থেকেও এসেছে সাহায্য। তবে চিকিৎসার খরচ উঠে এলেও সানিয়ার সমসাময়িক হৃদযন্ত্রের খোঁজ পাওয়া নিয়েই সমস্যা বাধে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির দিকে তাকিয়েই বসেছিলেন সরফরাজ। হাসপাতালের তরফ থেকেই জানানো হয়, আট বছরের শিশুকন্যার ব্রেনডেথ হয়েছে লীলাবতী হাসপাতালে। তার হৃদযন্ত্রই প্রতিস্থাপিত হবে সানিয়ার শরীরে। সোমবার সকালে খবর আসে। আশায় বুক বাঁধেন সরফরাজ। রাতেই মুলুন্ডের ফর্টিসে সানিয়ার হৃদযন্ত্রের প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
সফল অস্ত্রোপচারের পরেই স্বস্তির শ্বাস ফেলেন সরফরাজ। নিজের মুখেই সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতা জানান। বলেন, মেয়ের অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে এসেছে সংবাদমাধ্যমের সৌজন্যে। তারপর মানুষ সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন। প্রত্যেকে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। এবার আমার কাজ শুরু। তা হল, মেয়ের স্বপ্ন সফল করা। মেয়ের আইপিএস হওয়ার স্বপ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.