সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শাহিরা আহমেদ। কাশ্মীরের এই অষ্টাদশীর সঙ্গে বুরহান ওয়ানির মিল কোথায় জানেন? দুজনেই উপত্যকার একই স্কুলের পড়ুয়া। তবে কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদের বীজ বপনকারী হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গিগোষ্ঠীর কমান্ডার বুরহান ওয়ানির একেবারে বিপরীত মেরুর বাসিন্দা শাহিরা। বুরহান যেখানে কাশ্মীরকে অশান্ত করার জন্য হাতে বন্দুক তুলে নিয়েছিল, শাহিরা কিন্তু তা করেননি। বরং নিজের স্কুল তথা রাজ্যকে গৌরবান্বিত করেছেন। আগ্নেয়াস্ত্র নয়, বরং পড়ার বই-ই পছন্দ শাহিরার। তাই তো দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম হয়ে সবার মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি। মেধাতালিকায় প্রথম স্থানাধিকারী শাহিরার প্রাপ্ত নম্বর ৫০০-র মধ্যে ৪৯৮। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয়, বুরহানের মৃত্যুর পর গত বছরের জুলাই মাস থেকে প্রায় পাঁচ মাস স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ ছিল। তা সত্ত্বেও এই কামাল করে দেখিয়েছেন শাহিরা।
কীভাবে এই অসাধ্যসাধন করলেন শাহিরা? দিনের ২৪ ঘণ্টা যেখানে মসজিদের মাইকে তারস্বরে চিৎকারও তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে টলাতে পারেনি। এটাকে জীবনের অঙ্গ হিসাবে বর্ণনা করে শাহিরা বলেন, ‘এই পরিস্থিতির মধ্যেই আমি বড় হয়েছি। আমি শুধুমাত্র পড়াশোনাতেই মনোযোগ দিয়েছি। ঠিক করেই রেখেছিলাম, আমাকে পড়তেই হবে। কোনও কিছুই সেই ইচ্ছাকে টলাতে পারেনি।’
কাশ্মীরের ত্রাল জেলার দাদসারা গ্রামেই বাস করেন শাহিরা। এই অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে সবারই জানা। নিরাপত্তাবাহিনী এই গ্রামে জন্মানো বহু জঙ্গিকে নিকেশ করেছে। তারপর বুরহানের মৃত্যুর ঘটনা কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদের আবহকে ফের উসকে দেয়। সেই সময় বহু স্কুলের দরজাই বন্ধ হয়ে যায় অশান্ত পরিবেশের কারণে। তার মধ্যে দিয়েও শাহিরার সাফল্য চোখে পড়ার মতো।
সেই সময় কমিউনিটি স্কুলিংয়ের দৌলতেই ফের পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেন শাহিরা, জানিয়েছেন তাঁর বাবা শামিম আহমেদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.