বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: শক্ত হাতে দলের সংগঠনের হাল ধরুন। কংগ্রেসে আমার পরে আপনার কাছেই থাকবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার। সরাসরি প্রস্তাব দেন স্বয়ং সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। সটান মুখের ওপর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন জি-২৩ সদস্য ও প্রবীন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। জানিয়ে দেন, দলে নবীন নেতৃত্বের আপত্তি আছে। তাঁকে মেনে নেবে না। তাই প্রস্তাবও গ্রহণ করতে পারছেন না।
বৃহস্পতিবার রাতে সোনিয়ার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। নবীন নেতৃত্ব বলতে রাহুল গান্ধী ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের দিকেই গুলাম নবির ইঙ্গিত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। সোনিয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া দলের রাজ্যসভার প্রাক্তন নেতার দলবদলের সম্ভাবনাকে উসকে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দলের শীর্ষনেতৃত্বে মুখ বদলের দাবি জানিয়ে গান্ধী পরিবারের বিরাগভাজন হন গুলাম নবি আজাদ। বিক্ষুব্ধ শিবিরের নেতা বলে পরিচিত হয়ে যান। ফলস্বরূপ এবার জি-২৩ সদস্যদের অনেকেই টিকিট পেলেও তাঁকে রাজ্যসভার মনোনয়ন দেয়নি এআইসিসি (AICC)। হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন প্রবীন এই কাশ্মীরের নেতা। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। সুত্রের খবর, সোনিয়া ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর (Priyanka Gandhi) করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েই যোগাযোগ করেন। কথায় কথায় রাজ্যসভার প্রসঙ্গ আসে। তখনই অভিমান ভাঙাতে সংগঠনের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেন কংগ্রেস সভানেত্রী। কংগ্রেসের (Congress) যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে সংগঠনের দায়িত্বে থাকা কে সি বেনুগোপালকে সরিয়ে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানান। কিন্তু সোনিয়ার প্রস্তাবে তিনি যে রাজি হননি। শুক্রবার নিজেই তা সোশ্যাল মিডিয়া মারফত জানান। তাঁর ব্যাখ্যা, দলে এখন নবীন প্রজন্মের নেতাদের জমানা চলছে। তাঁদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়। তাঁরাও তাঁকে মন থেকে মেনে নিতে পারবেন না। ফলে সংগঠনে সমস্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করেন। তাই এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছেন না বলে মুখের ওপর জানিয়ে দেন।
যদিও সোনিয়াপুত্র সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) ও কন্যা প্রিয়ঙ্কার দিকেই গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad) ইঙ্গিত করেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, অনেক রাজ্যেই নেতৃত্বে নবীন মুখ তুলে আনার কাজ করছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কারা। এমনকী, রাজ্যসভাতেও প্রিয়াঙ্কা ঘনিষ্ঠ এক বিতর্কিত নেতাকে প্রার্থী করা হলেও গুলাম নবির মতো অভিজ্ঞ ও প্রবীণ নেতাকে তালিকায় রাখা হয়নি। প্রার্থী তালিকা দেখে ক্ষুব্ধ হন। প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ঘনিষ্ট মহলে দলবদলের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে জানান। তাঁর অবস্থান জানতে পেরে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব যোগাযোগ করেন। কিন্তু আদৌ দলবদলের মতো সিদ্ধান্ত প্রবীণ এই নেতা নেবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.