সোমনাথ রায়, নয়া দিল্লি: গুলাম নবি আজাদের ‘হঠাৎ’ বিস্ফোরণ কংগ্রেস নেতৃত্বকে যেমন অস্বস্তিতে ফেলেছে, তেমনই অপ্রস্তুতেও ফেলে দিয়েছে। প্রায় ৫ দশক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকা আজাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আক্রমণে নামতে পারছে না দল। আবার রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) তথা সোনিয়া গান্ধীকে যেভাবে কাশ্মীরের বর্ষীয়ান নেতা আক্রমণ করেছেন সেটা হজম করাও কঠিন কংগ্রেস নেতৃত্বের পক্ষে। আরও বড় সমস্যা হল এরপর দলে আরও ভাঙনের সম্ভাবনা প্রবল।
A man who has been treated by the greatest respect by the Congress leadership has betrayed it by his vicious personal attacks which reveals his true character. GNA’s DNA has been modi-fied.
— Jairam Ramesh (@Jairam_Ramesh) August 26, 2022
আজাদ কংগ্রেস সভানেত্রীকে যে বিস্ফোরক চিঠিটি লিখেছেন, তাতে রাহুল গান্ধীকে কার্যত তুলোধোনা করা হয়েছে। ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে নয়, কংগ্রেসের (Congress) বর্তমান দুর্গতির জন্য যে একক ভাবে রাহুল গান্ধীই দায়ী, সেটা চিঠিতে প্রতিপন্ন করে ছেড়েছেন আজাদ। যে অভিযোগগুলি তিনি করেছেন, তার জবাব কংগ্রেস নেতৃত্ব দিতে পারেনি। উলটে একপ্রকার মরিয়া হয়েই দলের শীর্ষ নেতারা প্রশ্ন তুলছেন আজাদের রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে। আজাদের দলত্যাগ নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতা জয়রাম রমেশ এবং অজয় মাকেন (Ajay Maken) বলছেন, “ঠিক যে সময় কংগ্রেস এবং গান্ধী পরিবার সর্বশক্তি দিয়ে মোদি সরকারের নীতির বিরুদ্ধে, ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং মেরুকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামছে, তখন আজাদের এই সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
দলের প্রচার বিভাগের প্রধান জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh) আবার সরাসরি মোদির (Narendra Modi) সঙ্গে আজাদের আঁতাতের অভিযোগ করেছেন। তিনি টুইটে বলেছেন,”যে ব্যক্তিকে কংগ্রেস সবচেয়ে বেশি সম্মান দিয়েছে, সেই ব্যক্তিই কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্বকে সরাসরি ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন, এটাই ওর চরিত্র বুঝিয়ে দেয়।” এরপরই রমেশ অভিযোগ করেন, ‘আজাদের ডিএনএতে মোদি ঢুকে গিয়েছেন। প্রথমে সংসদে চোখের জল ফেলা, তারপর পদ্ম বিভূষণ, তারপর দিল্লির বাড়িতে থাকতে দেওয়ার মেয়াদ বৃদ্ধি।’ ভারত জোড়ো যাত্রা এবং ‘মেহেঙ্গাই পর হাল্লা বোল’ বড় কর্মসূচির ঠিক আগে আগে কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন আজাদ? সে প্রশ্নও তুলছে কংগ্রেস। দলের আরেক সিনিয়র নেতা অশোক গেহলট বলছেন,”আজাদ সাহেবের সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। ৪ দশকের বেশি সময় তিনি কংগ্রেসের নানা পদে ছিলেন, তাঁর কাছ থেকে এই ধরনের চিঠি পাওয়াটা অপ্রত্যাশিত। বিশেষ করে সেই সময় যখন কংগ্রেস সভানেত্রী চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছেন।”
কংগ্রেস যখন আজাদকে আক্রমণ করছে, তখন দলে আরও ভাঙনের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যেই কাশ্মীরের জনা পাঁচেক নেতা কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন। আগামী দিনে কাশ্মীর কংগ্রেসের আরও বহু নেতা আজাদের পথ ধরে দল ছাড়তে পারেন বলে কানাঘুষো শুরু হয়েছে। আজাদ নিজেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি নতুন দল গড়বেন। আপাতত তাঁর লক্ষ্য কাশ্মীরের নির্বাচন। তারপর ফের জাতীয় রাজনীতিতে নজর দেবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.