সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেসের সঙ্গে ৫২ বছরের সম্পর্ক ত্যাগ করে তিনি ‘আজাদ’ তো হলেন, কিন্তু এরপর কী করবেন গুলাম নবি? কী হবে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ? শুরু হয়েছে জল্পনা।
এমনিতে আজাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব ভাল। রাজ্যসভায় বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার বিদায় সংবর্ধনার দিন প্রধানমন্ত্রীর চোখে জল দেখা গিয়েছিল। সুযোগ পেলে আজাদকে তিনি সংসদে ফিরিয়ে আনবেন, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন মোদি। এরপর তাঁর সরকার কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ‘পদ্ম’ সম্মানও দিয়েছে। অন্যান্য প্রাক্তন সাংসদদের দিল্লির বাড়ি কেড়ে নিলেও আজাদের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন উদারতা দেখিয়েছে সরকার। তাছাড়া যে ভাষায় রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন আজাদ, তাতে মনে হতেই পারে কংগ্রেসের (Congress) সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে থাকা দলে যোগ দেবেন তিনি।
সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে (BJP) যোগ দেওয়া হরিয়ানার নেতা কূলদীপ বিষ্ণোই সেই সম্ভাবনা উসকেও দিয়েছেন। কিছুদিন আগে কংগ্রেসের হরিয়ানার পর্যবেক্ষক ছিলেন আজাদ। স্বাভাবিকভাবেই কূলদীপ বিষ্ণোইয়ের (Kuldeep Bishnoi) সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। আজাদ কংগ্রেস ছাড়ার পরই বিষ্ণোই বলে দিয়েছেন, ‘কংগ্রেস আত্মহত্যার মুডে আছে। আজাদজি খুব ভাল জননেতা। দল আমাকে বললে আমি ওনার সঙ্গে কথা বলে ওনাকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ানোর চেষ্টা করতে পারি।” অর্থাৎ বিজেপির তরফ থেকে আজাদের দরজা খোলা রয়েছে। যদিও ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা বিজেপিতে যোগ দেবেন না। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, আজন্ম ধর্মনিরপেক্ষতার ঝান্ডা নিয়ে তিনি রাজনীতি করে এসেছেন। শেষ বেলায় নিজের নীতির সঙ্গে আপস করবেন না। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিই করবেন।
ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, কংগ্রেস ছাড়ার পর আজাদের নজর রয়েছে কাশ্মীর নির্বাচনের দিকে। আগামী বছর শুরুতেই ভোট হয়ে যাবে উপত্যকায়। সেই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কাশ্মীরে স্থানীয় একটি দল তৈরি করবেন সদ্য ইস্তফা দেওয়া কংগ্রেস নেতা। ইতিমধ্যেই কাশ্মীরের জনা পাঁচেক নেতা কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন। আগামী দিনে কাশ্মীর কংগ্রেসের আরও বহু নেতা আজাদের পথ ধরে কংগ্রেস ছাড়তে পারেন বলে কানাঘুষো শুরু হয়েছে। সেই অনুগামীরা আজাদের নতুন দলে যোগ দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
কাশ্মীর ভোটের পরই আজাদ নজর দেবেন জাতীয় রাজনীতিতে। নিজের ইস্তফাপত্রেই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, সারাজীবন যে আদর্শের জন্য লড়াই করেছেন, সেই লড়াইটাই চালিয়ে যাবেন জাতীয় কংগ্রেসের বাইরের কোনও মঞ্চ থেকে। সেই কাজে কংগ্রেসের কিছু প্রাক্তন সতীর্থ তাঁকে সাহায্য করবেন বলেও দাবি করেছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা। অর্থাৎ আজাদের ইঙ্গিত কাশ্মীরে সফল হলে তাঁর নতুন দল জাতীয় রাজনীতিতেও পদার্পণ করবে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের জি-২৩ গ্রুপের বহু নেতা তাঁর সঙ্গী হতে পারেন। এদের মধ্যে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, কপিল সিব্বলরা ইতিমধ্যেই কংগ্রেস ছেড়েছেন। বিক্ষুব্ধদের তালিকায় রয়েছেন আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারিরা। শোনা যাচ্ছে, শীঘ্রই দিল্লিতে জি-২৩ গোষ্ঠীর আজাদপন্থী নেতারা দেখা করতে পারেন। তারপরই ঠিক হবে, তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.