ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা কুলদীপ সেনেগারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জানানোর পরেও ব্যবস্থা নিচ্ছিল না পুলিশ। তাই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারি বাসভবনের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন উন্নাওয়ের ধর্ষিতা। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই নড়েচড়ে বসেছিল উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। এরপর অনেক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। একদিকে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে দিল্লির এইমস হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন নির্যাতিতা। অন্যদিকে কুলদীপ সেনেগারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আদালত। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর উন্নাওয়ের ওই নির্যাতিতা বিচার পেলেও উত্তরপ্রদেশে প্রায় প্রতিদিন এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে বলে অভিযোগ। সোমবার পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ তুলে SSP অফিসের সামনে বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে বিষপান করলেন এক গণধর্ষিতা। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি আবার ঘটেছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন ওই তিনজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাণসীর ওই যুবতীটির অভিনয়ের শখ ছিল। মুম্বই গিয়ে অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন। আর সেটাই কাল হল তাঁর জীবনে। সম্প্রতি মুম্বই সিনেমা জগতে কাজ করে দেওয়ার টোপ দিয়ে তাঁকে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় কয়েকজন। তারপর জোর করে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পরে কোনওরকমে ওই জায়গা থেকে পালিয়ে গিয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা। কিন্তু, পুলিশ মামলাটি লঘু করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে সোমবার বারাণসীর এসএসপি অফিসের সামনে বাবা-মাকে নিয়ে হাজির হন ওই যুবতী। তারপর আচমকা তাঁর সঙ্গে ঘটা অন্যায়ের কথা বলে হাতে থাকা বিষের কৌটো বের করে বিষপান করেন। একই কাজ করেন তাঁর বাবা-মাও। বিষয়টি দেখতে পেয়ে ছুটে আসেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মী ও স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভরতি করা হয়।
নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ তোলা হলেও তা অস্বীকার করেছেন এসএসপি প্রভাকার চৌধুরি। উলটে তিনি দাবি করেন, ওই মেয়েটি ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ যে মামলার ধারা লঘু করা হয়েছে। কিন্তু, বাস্তবে তা বাড়ানো হয়েছে। প্রথমে যখন অভিযোগ দায়ের হয় তখন শুধুমাত্র ভারতীয় পিনাল কোডের ৩৬৩ ও ৩৬৬ ধারা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে ৩৭৬(গণধর্ষণ) ধারা যুক্ত করে পুলিশ। তাই মামলা লঘু করার অভিযোগ মিথ্যে। এর পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজও চলছে।
যতদিন যাচ্ছে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে উত্তরপ্রদেশে। বাড়ছে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও। উন্নাওয়ে পরপর কয়েকটি ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা আর তার প্রেক্ষিতে পুলিশের পদক্ষেপ সমালোচনার ঝড় তুলেছে গোটা দেশে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে বিরোধীরা যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যকে অধমপ্রদেশ বলেই ডাকতে শুরু করেছে। রাজ্য প্রশাসন বেড়ে চলা ধর্ষণের ঘটনা রুখতে চেষ্টা চালালেও নিচের স্তরের পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক সময়ই অসহযোগিতার অভিযোগ জানাচ্ছে ধর্ষিতার পরিবার। বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা কুলদীপ সেনেগার থেকে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিন্ময়ানন্দের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এলেই, পুলিশ পত্রপাঠ নির্যাতিতাদের তাড়িয়ে দিচ্ছে বলেও ক্ষোভ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.