সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া তাণ্ডবের তীব্র নিন্দা করলেন প্রাক্তন পড়ুয়ারা। দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন থেকে নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর থেকে জেএনইউর প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়া কুমার। সবাই এই ঘটনায় জড়িতদের কড়া ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। দেশের অর্থমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী যেখানে এই ঘটনাকে একথায় ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেছেন। সেখানে কানহাইয়া কুমার সরাসরি তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
গতকালের ঘটনা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, ‘গতকাল জেএনইউ ক্যাম্পাসে যে ঘটনা ঘটেছে তা ভয়াবহ। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই সরকার ক্রমাগত বলে আসছে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সমস্ত পড়ুয়ার জন্য নিরাপদ বানাতে হবে।’
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর টুইট করেন, ‘জেএনইউ কী ঘটছে তার ছবি আমি দেখেছি। এই হিংসার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পুরোপুরি বিরোধী।’
তাঁদের এই বক্তব্যের কথা সামনে আসার পরেই দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি। এই ঘটনার পিছনে এবিভিপির হাত আছে বলে অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের আবেগপ্রবণ অনুভূতি প্রকাশ করার আগে আপনারা কি পদত্যাগ করার বিষয়টি চিন্তা করবেন?’
জেএনইউর আরেক প্রাক্তনী ও বলিউড অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর আবেগপ্রবণ হয়ে একটি ভিডিও টুইট করেছেন। তাতে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সাধারণ মানুষকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে জমায়েক করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সবাইকে একজোট দিল্লি পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অনুরোধ করেছেন। যাতে তারা হিংসা থামিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি এই ঘটনাকে তিনি ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে দেখছেন বলেও উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘নিশ্চয়ই এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। কারণ, আমার অভিভাবকরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই বসবাস করেন।’
তাঁর এই ভিডিওটি রিটুইট করে জেএনইউর পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টারাই। তিনি টুইট করেন, জেএনইউতে যা ঘটেছে তাতে আমি আন্তরিকভাবে ব্যথিত। পড়ুয়াদের প্রতি আমার সহানুভূতি রয়েছে। দয়া করে বিদ্যার এই মন্দিরকে রক্ষা করুন।
আর এই বিষয়ে সোজাসুজি কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন জেএনএউর প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়া কুমার। সরকার পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে সরকারের এই দমন-পীড়নের কাছে পড়ুয়ারা কোনওভাবেই মাথা নিচু করবে না বলেও দাবি করেন। বরং এর ফলে পড়ুয়াদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে বলে জানান।
রবিবার রাতের ঘটনার পর একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে জেএনইউর ছাত্র সংসদ ও অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। উভয়পক্ষেরই অভিযোগ, তাদের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে অন্যরা। এর জেরে ২০ জন জখম হয়েছে। তাদের দিল্লির AIIMS হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.