সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুক্ত সংশোধনাগারই তাঁর বাড়ি৷ ৮x৮ -এর ছোট্টঘরে বেশ কষ্ট করেই চলে তাঁদের জীবন৷ পীযূষ গোয়েলের বাবা ফুল চাঁদ গোয়েল খুনের মামলায় অভিযুক্ত এবং ১৪ বছরের জন্য কারাগারে বন্দী৷ কিন্তু অন্যান্য সংশোধনাগারের থেকে খানিক আলাদা এই মুক্ত কারাগারে রয়েছে বিশেষ সুবিধা৷ সংশোধনাগারের বাইরে গিয়ে কাজ সেরে বিকেলের মধ্যে ফিরে আসতে হয় এখানে৷ আর এই কারাগারেরই বাসিন্দা পীযুষ৷ বাবার ইচ্ছেপূরণ করাই তাঁর স্বপ্ন৷ শত কষ্টের মধ্যে লেখাপড়া করে আইআইটি’র প্রবেশিকা পরীক্ষায় চমকপ্রদ ফল করলেন পীযুষ৷
গত দু’বছর ধরে অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের মতোই পড়াশোনা করে যাচ্ছিলেন পীযুষ৷ তফাৎ একটাই, অন্যদের মতো লেখাপড়ায় বিশেষ সুযোগ-সুবিধা কোনওদিনই তেমনভাবে পাননি৷ রাত এগারোটা বাজলেই সংশোধনাগারের আলো বন্ধ করে দেওয়া হত৷ ভাল ফল করার জন্য যে ভাল বইপত্র দরকার তাও পাওয়া যেত না হাতের কাছে৷ তার উপর বাবা ফুল চাঁদের ছেলেকে নামী কোচিং সেন্টারে ভর্তি করে দেওয়ারও কোনও সুযোগ ছিল না৷
কিন্তু এতকিছুর পরও হার মানেননি পীযূষ৷ সংশোধনাগারের রক্ষীদের উৎসাহে লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছেন৷ ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষায় ৪৫৩ র্যাঙ্ক পেয়েছেন তিনি৷
কঠিন পরীক্ষায় সফল হতে পেরে কেমন লাগছে প্রশ্ন করা হলে, কোটার লাজুক ছেলেটি জানিয়েছেন, “প্রত্যেকেই ভাবেন জেলের জীবন খুব কঠিন হয়৷ কিন্তু কারাগারের জীবন তেমন মন্দও নয়৷ স্বপ্নপূরণ করার ইচ্ছা থাকলে এখানে লেখাপড়া করেও স্বপ্নপূরণ করা যায়৷”
কারাগার কর্তৃপক্ষকে পীযূষের ভাল ফল করার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, কর্তৃপক্ষর তরফে জানানো হয়, ভবিষ্যতে কারাগারে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার মানোন্নয়ন করা হবে৷ যাতে পীযূষের মতো আরও উদাহরণ তৈরি হয় সেই বিষয়কে মাথায় রেখেই কারাগারের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় আরও উৎসাহ দেওয়া হবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.