সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : নাগাল্যান্ডের কয়লাখনিতে মৃত্যু হল অসমের চার শ্রমিকের। মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে নাগাল্যান্ডের লংলেং জেলার ফিচেন এলাকার একটি পরিত্যক্ত কয়লাখনিতে। মৃতরা হলেন জিতেন তাঁতি (৪০), কৃষ্ণান গগৈই (৩২), টুটু ডেকা (২৮) ও সুশান ফুকন (৩৭)। ময়নাতদন্ত ছাড়াই ওই শ্রমিকদের মৃতদেহগুলি তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার পাশাপাশি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে লংলেং জেলা পুলিশ।
এপ্রসঙ্গে লংলেং-এর সহকারী পুলিশ কমিশনার জন সুলিস সাংতাম বলেন, “এই দুর্ঘটনাটি আচমকা ধসের ফলে খনিমুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে অথবা ওই পরিত্যক্ত খনির মধ্যে থাকা বিষাক্ত গ্যাসের কারণে ঘটেছে। শনিবার পুলিশের কাছে এই দুর্ঘটনার খবর আসে। তারপর ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতেই সেগুলো উদ্ধার করে পুলিশ স্টেশনে রেখে দেওয়া হয়। পরে মৃতদের পরিবার ময়নাতদন্ত করাতে না চাওয়ায় সেগুলো তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।”
[সীমান্তে লাগাতার পাক উসকানি, জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী]
তিনি আরও জানান, গত জানুয়ারি মাসে রাজ্য সরকারের তরফে বেআইনি কয়লা তোলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর বেআইনি খনিগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। ওই খনিটিও জানুয়ারি থেকে বন্ধ ছিল। মৃতরা আগে সেখানে কাজ করত। মনে হয়, সেসময় ফেলে যাওয়া কিছু জিনিস খনি থেকে তুলে আনতেই নেমেছিলেন ওই চারজন। কিন্তু, সেখানেই তাঁদের মৃত্যু হয়।
আসামের শিবসাগর জেলার বাসিন্দা মৃত কৃষ্ণান গগৈই-এর এক প্রতিবেশী হরু ভাই জানান, শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ খনিতে নেমেছিল ওই চারজন। সেখানে বিষাক্ত গ্যাসের ফলে ওদের মৃত্যু হয়। ধসের কারণে ওই খনিটি কিছুদিন ধরে বন্ধ থাকলেও শুক্রবার থেকে ফের কাজ শুরু হয়েছিল। সরকারের তরফে বেআইনি খনিগুলো বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও এই অঞ্চলে তা কেউই মানছে না।
তাঁর কথা মেনে নিয়ে নাগাল্যান্ডের মন জেলার এক সরকারি আধিকারিক জানান, এখানে অনেক জায়গার মাটির নিচে কয়লার স্তর রয়েছে। সরকারের তরফে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তাই বেআইনিভাবে কয়লা তোলার বিষয়টা আটকানো সম্ভব হচ্ছে না।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মেঘালয়ের জয়ন্তিয়া পাহাড়ের কাছে পরিত্যক্ত একটি কয়লাখনিতে আটকে পড়ে ১৫ জন শ্রমিক। কয়েকদিন পরে কয়েকজনের দেহ উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ বাকিরা। জানুয়ারি মাসেও পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড়ের মুকনুর এলাকার একটি কয়লাখনিতে ধস নেমে মারা যান দু’জন। এরপরই নাগাল্যান্ড সরকারের তরফে বেআইনি ভাবে কয়লা তোলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যদিও তা যে মানা হচ্ছে না তা এই দুর্ঘটনা পরে প্রমাণ হয়ে গেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.