সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংকটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। এই মুহূ্র্তে রাজধানীর এইমসে ভরতি রয়েছেন তিনি। শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতির জন্য বর্ষীয়ান বিজেপি নেতাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। খবর পেয়েই বাজপেয়ীকে দেখতে এইমসে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দু’মাসের বেশি সময় ধরে এইমসে ভরতি রয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বুধবার পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। গত দুদিন ধরেই ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে বর্ষীয়ান বিজেপি নেতাকে। বাজপেয়ীর শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন হয়েছে। বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদি। জানা গিয়েছে, মূত্রনালিতে সংক্রমণের জেরে চরম সংকটে ৯৩ বছরের বিজেপি নেতা। তাঁর কিডনি পুরোপুরি বিকল হয়ে গিয়েছে। মেডিক্যাল বুলেটিনের পরেই এইমস থেকে বেরিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬-তে প্রথম ১৩ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেছিলেন বাজপেয়ী। এরপর দ্বিতীয়বারের জন্য ১৯৯৮-তে ফের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেন বাজপেয়ী। একটানা ২০০৪ সাল পর্যন্ত তাঁরই প্রধানমন্ত্রীত্বে দেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ছিল বিজেপি তথা এনডিএ জোট। এই দীর্ঘ সময় অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। তাঁর সময়ের সবথেকে জ্বলন্ত ইস্যু ছিল কার্গিল সমস্যা। এই সময় কাশ্মীর সীমান্তে জঙ্গি হামলা থেকে শুরু করে পাক সেনার গুলি বর্ষণের মতো ঘটনা। দক্ষ হাতে একের পর এক বিপর্যয়ের মোকাবিলা করেছেন বাজপেয়ী। তাঁর আমলেই ভারত-পাক মৈত্রীর নয়া যোগসূত্রের সূচনা হয়। ভারত পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতা এক্সপ্রেস চালানোর উদ্যোগও নিয়েছিলেন তিনি। ২০০০ সালের এপ্রিলে তাঁর উদ্যোগেই দিল্লি থেকে লাহোরের উদ্দেশে রওনা হয় সমঝোতা এক্সপ্রেস।
গুজরাট দাঙ্গার মতো ঘটনা ঘটলেও সৌজন্যের রাজনীতিতে সমসাময়িক নেতাদের অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন অকৃতদার বাজপেয়ী। প্রধানমন্ত্রীত্বের পাট চুকোলে সক্রিয় রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে সরিয়ে নেন এই বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা। গত দশবছরে দলীয় বৈঠকেও তাঁকে খুব একটা দেখা যায়নি। বিরোধী নেতৃত্বের সঙ্গেও মধুর সম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন সবসময়। তাই রাজনীতি থেকে সরে এলেও বিরোধীরা বাজপেয়ীকে নিয়ে কখনও অসন্তোষ প্রকাশ করেনি। রাজনৈতিক কারণে কাউকে কটাক্ষ বা আক্রমণ করতে দেখা যায়নি। তবে বিজেপির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তুলনায় টানলে বাজপেয়ীকেই এগিয়ে রাখবেন সবাই।
বলা বাহুল্য, বেশ কিছুদিন ধরেই জটিল অসুখে ভুগছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। মূত্রনালির সংক্রমণ জনিত কারণে গত জুন মাস থেকে এইমসে ভরতি রয়েছেন তিনি। এর আগে গত মার্চেই বাজপেয়ীর মৃত্যুর গুজব রটে। তবে তা নতুন কিছু নয়। ২০১৫-তেও একবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর গুজব রটেছিল। সেইসময় ওড়িশার বালেশ্বরের এক স্কুলের শিক্ষক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে ছুটিও দিয়ে দেন। পরে তাঁকে সাসপেন্ডও করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.