বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, রাজকোট: বয়সের ভারে ন্যুজ। ভোটে দাঁড়ানোর পরিস্থিতি নেই। পার্টিকে আগেই লিখেছিলেন বলে গেরুয়া শিবিরের তরফে জানান হয়। কিন্তু ভোট প্রচার শুরু হতেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কার্যকলাপ অবশ্য অন্য কথা বলছে। ভোটে দাঁড়াতে চান না বলে কার্যত জোর করেই মুচলেখা লেখান হয়েছিল। তাই ক্ষোভে ও অভিমানে প্রচারে গা লাগাচ্ছেন না বিজয় রুপানি (Vijay Rupani)। এমনকী নিজের ছেড়ে আসা কেন্দ্র রাজকোট (Rajkot) পশ্চিমে দলের প্রার্থীর হয়ে প্রচারে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী যেদিন প্রচারে আসেন সেইদিন কিছু সময়ের জন্য হাজির হন। বক্তব্যও রাখেন।
আদিবাড়ি রাজকোট শহরে হলেও মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গান্ধীনগরেই (Gandhinagar) স্থায়ী বাসা বাঁধেন। গান্ধীনগরের দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করলেও ভোট প্রচারে সাড়া দিচ্ছেন না প্রবীণ এই বিজেপি (BJP) নেতা। শুধুমাত্র ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের অনুরোধ ফেরাতে পারেননি বলে সেখানে গিয়েছেন। চিকিৎসকদের নিষেধ রয়েছে। তাই শারিরীক অসুস্থতার কারণে প্রচারে যেতে পারছেন না। দলের শীর্ষনেতৃত্বকেও সেকথা জানিয়েছেন বলে জানান।
২০০২ সালে রাজকোট পশ্চিম কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে গুজরাটের (Gujarat) মসনদে বসেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি (Narendra Modi)। টানা ১০ বছর সেখান থেকে জয়ী হন মোদি। ১২ সালে জয়ী হন বাজুভাই বালা। দু’বছরের মধ্যে তিনি রাজ্যপাল হয়ে যাওয়ায় উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী করে শিল্পপতি বিজয় রুপানিকে। এরপর ১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্শিতেও বসতে হয়। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে চেয়ার ছেড়ে দিতে হয় বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলকে (Bhupendra Patel)। কিন্তু পরিষদীয় রাজনীতি থেকে চিরকালের জন্য বিদায় নিতে হবে তা হয়তো স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি সঙ্ঘ পরিবার ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।
বিজেপির প্রার্থী তালিকাপ্রকাশের পরেই জানা যায়, বিজয় রুপানির বদলে রাজকোট পশ্চিম কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে অমিত শাহ (Amit Shah) ঘনিষ্ঠ দর্শিতাপরশ শাহকে। এটাও জানান হয় যে, রুপানি নিজেই প্রার্থী হতে চাননি। তাঁকে যাতে দল প্রার্থী না করে সেই মর্মে লিখিত দেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে (JP Nadda)। তবে প্রার্থী ঘোষণার আগে থেকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল। দল তাঁকে প্রার্থী করবে না বলে শোনা যায়।
প্রার্থী না হলেও প্রচারে সময় দেবেন বলে গেরুয়া শিবিরের তরফে জানান হয়। কিন্তু ভোটের পারদ চরতেই রুপানির গতিবিধি নিয়ে দলের অভ্যন্তরে শুরু হয় চাপানউতোর। দল ও প্রার্থীদের পক্ষ থেকে প্রবীণ এই নেতাকে প্রচারে নামার অনুরোধ করলেও সন্তর্পণে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এড়িয়ে যাচ্ছেন অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডার প্রচার। তবে সোমবার তাঁর ছেড়ে আসা কেন্দ্র রাজকোট পশ্চিমে প্রধানমন্ত্রীর সভায় হাজির ছিলেন। এছাড়াও ভাবনগর কেন্দ্রের প্রার্থী তাঁর পছন্দের পুরুষোত্তম সোলাঙ্কির মতো কয়েকজনের ডাকে সাড়া দিতে দেখা যাচ্ছে রুপানিকে।
গান্ধীনগরে দলের রাজ্য দফতরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, দল বয়সের অজুহাতে তাঁকে প্রার্থী না করলেও ভোটে দাঁড়ানোর পুরোদস্তুর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ইচ্ছের কথা ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েও লাভ হয়নি। তাই ক্ষোভে ও অভিমানে দলের নির্বাচনী কার্যকলাপ থেকে দূরত্ব রেখে চলছেন। তবে এদিন রাজকোটে মোদির সভা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জানান, শরীর যতদিন সচল থাকবে দলের সঙ্গে থাকবেন। প্রচারেও আছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.