সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চেয়েছিলেন রাম মন্দির ইস্যুর নিষ্পত্তি হোক। লড়েছিলেন সেই মামলা নিয়েও। একাধিকবার জোর গলায় নিজের উপর ‘সাম্প্রদায়িক’ তকমা সাঁটতেও পিছপা হননি প্রয়াত বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। আজ, ৯ নভেম্বর সেই ঐতিহাসিক দিন, ৫০০ বছর ধরে চলতে থাকা অযোধ্যা বিতর্কের ইতি টানল দেশের শীর্ষ আদালত। বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি গেল রামলালার নামে। যেখানে গড়ে উঠবে বিশালাকার মন্দির। তবে ইচ্ছেপূরণের এই দিনটি দেখে যেতে পারলেন না সুষমা স্বরাজ।
গত বছর থেকেই গেরুয়া শিবিরের একের পর এক বিশিষ্ট নেতা-মন্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। অটল বিহারী বাজপেয়ী, মনোহর পারিকর, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ। আজকের ভারতীয় জনতা পার্টির ভিত শক্ত হয়েছে যাঁদের হাত ধরে। অযোধ্যা মামলার প্রথম দিন থেকেই যাঁরা শক্ত হাতে লড়েছেন। আজ ২৭ বছর ধরে চলতে থাকা অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তি ঘটল। তবে দেখে যেতে পারলেন না অটলজি, সুষমাজিদের কেউই। জীবদ্দশায় অযোধ্যায় যে রামলালার মন্দির তৈরির জন্য যে লড়াই তাঁরা করেছেন, সেকথা স্মরণ করেই স্মৃতিচারণায় মগ্ন হয়েছেন অযোধ্যার বহু বিজেপি নেতা। মাস তিনেক আগেই ৬ আগস্ট পরলোক গমন করেছেন সুষমা স্বরাজ। আজ বেঁচে থাকলে এই দিনের সংজ্ঞাটা যে তাঁদের কাছে অন্যরকম হত, তা বলাই বাহুল্য।
আশির দশকের গোড়ায় জাতীয় কংগ্রেসের পর এক নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয় ভারতের গণতন্ত্রে- ভারতীয় জনতা পার্টি। আর সেই সঙ্গেই গোটা দেশে মাথাচাড়া দেয় হিন্দুত্ববাদ। ভগবান রামের জন্মভূমিকে অশুভ শক্তি থেকে ‘মুক্ত’ করার ডাক দিয়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতৃত্বে গঠিত হয় রাম মন্দির কমিটি। তার পুরোধা করা হয় বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবানীকে। এরই ফলশ্রুতি দেখা যায় ১৯৯২ সালে।
আজ আডবানীর বয়স ৯২। তাহলে কী ‘৯২-এর সেই আন্দোলনের ফসলই ৯২-এ তুললেন আডবানী? তাও আবার জন্মদিনের ঠিক পরের দিনই। ৮ নভেম্বরই ৯২তে পা দিয়েছেন তিনি। আর তার পরের দিনই মামলার রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই মানুষটিকে নিঃসন্দেহে রাম মন্দির আন্দোলনের প্রাণপুরুষ বলা যায়। জন্মদিনের পরের দিনই বোধহয় জীবনের সবচেয়ে বড় উপহারটি পেয়ে গেলেন আডবানী। ঘটল কি শাপমোচন! কারণ, নিজের আত্মজীবনীতে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর দিনটি নিয়ে আক্ষেপ করেছেন। এই দিনটিকে জীবনের অন্যতম দুঃখের দিন বলেই চিহ্নিত করেছিলেন তিনি। আজ ২.৭৭ একর জায়গার অধিকার পেলেন রামলালা। নেপথ্যে? লালকৃষ্ণ আডবানী। যে বীজ তিনি পুঁতেছিলেন অযোধ্যার মাটিতে। দিনের পর দিন জল-আলো-বাতাস পেয়ে তা আজ বিরাটাকার ধারণ করেছে। তবে গেরুয়া দলের একাংশের আক্ষেপ, এই ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী থাকতে পারলেন না অটল বিহারী বাজপেয়ী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.