ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোদি সরকারের আরও পাঁচ বছর অন্ধকারে ঠেলে দেবে ভারতকে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের ১৭তম লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে গত ১৯ মে। রেজাল্ট বের হবে ২৩ মে। তার আগে ১৯ মে সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ শেষ হতেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তরফে এক্সিট পোল প্রকাশিত হয়। তাতে এনডিএ ফের ক্ষমতায় ফিরছে বলেই জানা গিয়েছে। তারা ক্ষমতায় ফিরলে ফের নরেন্দ্র মোদিই প্রধানমন্ত্রী পদে বসবেন। কিন্তু, ফের তাঁর সিংহাসনে আসীন হওয়া ভারতের পক্ষে মঙ্গলজনক হবে না বলে দাবি প্রতিবেদনটির লেখক কপিল কামিরেড্ডির।
মোদি ফের ক্ষমতায় ফিরলে ভারতে সাম্প্রদায়িক অশান্তি আরও বাড়বে বলেই উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে দেশবাসীকে প্রচুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও একটিও পূরণ করেননি মোদি। যদিও তাঁকে প্রধানমন্ত্রী প্রজেক্ট করেই ৩০ বছর পর কোনও রাজনৈতিক দল এককভাবে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। কিন্তু, ক্ষমতায় আসার পর সেকথা আর মাথায় রাখেননি তিনি! যেমন রাখেননি বছরে ২ কোটি করে মানুষকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টিও। যার ফলে গত ২০ বছরের মধ্যে তাঁর শাসনকালেই দেশে বেকারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু যাকে ‘দ্য রিভার অফ ইন্ডিয়া’ বলেছিলেন সেই গঙ্গাকেও দূষণমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নমো। কিন্তু, এখনও সেই গঙ্গা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে প্রচুর দূষিত পদার্থ ও রাসায়নিক কারখানাগুলির বর্জ্য।
ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাধীনতার পর ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষভাবে দেশ চালানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু, মোদি এসে সব সাংবিধানিক সংস্থাকে ব্যবহার করে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর প্রক্রিয়া চালিয়েছেন। এর ফলে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের ভিতই গোড়া থেকে নড়ে গেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের কিছু মানুষকে খুশি করতে গিয়ে মোদি যেভাবে বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়েছেন। তাতে ভারতের মতো একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশের প্রধানমন্ত্রী পদের বিশ্বাসযোগ্যতাই ক্ষুন্ন হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর শাসনকালে দেশের বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা, সেনাবাহিনী ও বিচার বিভাগের কাজে প্রচুর হস্তক্ষেপ হয়েছে। যা কিছুটা ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে দেখা গিয়েছিল।
২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার পর মুসলিমদের জন্য তৈরি হওয়া অস্থায়ী ক্যাম্পগুলি সম্পর্কে মোদির বক্তব্যও উল্লেখিত হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। লেখকের অভিযোগ, ওই ক্যাম্পগুলিকে ‘সন্তান প্রজননের কেন্দ্র’ বলে নিজের উগ্র হিন্দুত্ববাদী মানসিকতারই পরিচয় দিয়েছিলেন গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসে গত পাঁচ বছরে দেশব্যাপী সেই মানসিকতা খুব সুচারুভাবে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যার ফলে গোরক্ষকদের হাতে অবাধে প্রাণ হারিয়েছেন বহু নির্দোষ মানুষ। দেশজুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে সন্দেহ ও অসহিষ্ণুতার আবহাওয়া। সৃষ্টি হয়েছে মানুষে মানুষে বিভাজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.