মাসুদ আহমেদ, শ্রীনগর: সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে বড়সড় সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক ভেস্তে দিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। ওইদিন শ্রীনগরে হামলার ছক কষেছিল পাকিস্তান মদতপুষ্ট জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে জঙ্গিদের গোপন ডেরায় অভিযান চালানো হয়। পুলিশের দাবি, পুলওয়ামার মতো বিপর্যয় ঘটাতে চেয়েছিল জইশ জঙ্গিরা। কিন্তু, তা সাফল্যের সঙ্গে রুখে দেওয়া গিয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাঁচ জইশ জঙ্গিকে। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক।
ধৃত পাঁচ জঙ্গি হল, হজরতবালের সদরবাল এলাকার বাসিন্দা আইজাজ আহমেদ, আসার কলোনির বাসিন্দা উমর হামিদ শেখ, আসার কলোনির আরেক বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদ চিকলা ওরফে ইমরান, ইলাহিবাগ সৌরা এলাকার বাসিন্দা সাহিল ফারুক গোজরি, হজরতবাল এলাকার নাসির আহমেদ মির। এরা প্রত্যেকেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রশিক্ষিত ফিঁদায়ে (Fedayeen)। পুলিশের দাবি, পাকিস্তানের নির্দেশেই এরা ২৬ জানুয়ারি হামলার অপেক্ষায় ছিল। জেরায় সেকথা কবুলও করেছে তারা। ৩৭০ ধারা বিলোপ, জম্মু ও কাশ্মীরের পুনর্গঠন ইত্যাদির বদলা নিতেই এই হামলার ছক কষা হয়েছিল। ফের আরেকটা পুলওয়ামার মতো গণহত্যা চালিয়ে ভারতীয় সেনা ও ভারত সরকারকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিল তারা।
মধ্য কাশ্মীরের ডিআইজি বি কে বিরদি জানিয়েছেন, জঙ্গিদের গোপন ডেরা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি বিস্ফোরক বোঝাই জ্যাকেট, ১৪৩টি জিলেটিন স্টিক, গোল হিটারের মাপের ৭টি ভারী বিস্ফোরক, ৪২টি ডিটোনেটর, দূরপাল্লার বন্দুকের সাইলেন্সার, প্রচুর বলবিয়ারিং, রিমোট ট্রিগার, একটি দূরনিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক, একটি সিডি ড্রাইভ, দুটি হার্ড ডিস্ক, ছ’টি চিনা ওয়াকিটকি, দুটি পিস্তল, তিনটি হাতুড়ি, একাধিক মোবাইল, তিনটি ভারী ব্যাটারি, চার্জার, হিটারের কয়েল, নানা ধরনের তার, কিছু রাসায়নিক, আড়াই লিটার নাইট্রিক অ্যাসিড, টেপ, রোল, জ্যামার, একটি ল্যাপটপ, জেহাদি পুস্তিকা।
এপ্রসঙ্গে বি কে বিরদি বলেন, আমরা নিশ্চিত যে ওই পাঁচ জইশ জঙ্গি শক্তিশালী আত্মঘাতী হামলা চালানোর ভয়ানক ছক কষেছিল। কিছু বড় একটা করে দেখানোর জন্য তাদের উপর ‘চাপ’ ছিল। সম্প্রতি হজরতবাল এলাকায় দু’টি গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। সেই হামলাতেও এই জঙ্গিরা জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। দু’দিন আগেই বহু জায়গায় চালু হয়েছে নিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড পরিষেবা। বাকি অংশেও ধীরে ধীরে চালু করা হচ্ছে। পুরোদমে ইন্টারনেট চালু হলে জঙ্গি তৎপরতা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছে সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দারা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কাশ্মীরের কোনও জায়গায় হয়তো ঘাপটি মেরে রয়েছে জইশের একাধিক মডিউল। যারা নির্দেশ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে হামলা চালাতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.