Advertisement
Advertisement
দিল্লি আগুন

কুর্নিশ, জতুগৃহে আটক ১১ জনের প্রাণ বাঁচিয়ে ‘হিরো’ দমকলকর্মী রাজেশ শুক্লা

আগুন লাগার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে শিউরে উঠছেন স্থানীয়রা।

Fireman Rajesh Shukla is a real hero who saved around 11 lives
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:December 8, 2019 5:23 pm
  • Updated:December 8, 2019 7:26 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার পর্যন্ত ছবিটা ছিল আর পাঁচটা কর্মব্যস্ত দিনের মতো। কিন্তু রবিবার ভোরে সবটা বদলে গেল। জতুগৃহে পরিণত হল দিল্লির আনাজ মান্ডির ব্যাগের কারখানা। আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিল ৪৩টি প্রাণ। আহত অন্তত ১৫ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। যদি অতিরিক্ত দমকল ইঞ্জিন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দলের জন্য অপেক্ষা করতেন দমকলকর্মী রাজেশ শুক্লা। কিন্তু তিনি তেমনটা করেননি। অগ্নিদগ্ধ অসহায় মানুষগুলির চিৎকার শুনে নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি। মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে দুর্দান্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন রাজেশ। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা কারখানায় প্রবেশ করে একাই বাঁচিয়েছেন ১১টি জীবন। রিয়েল লাইফের এই হিরোকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা দেশ।

দমকলকর্মীদের মধ্যে প্রথম রাজেশ শুক্লাই জ্বলতে থাকা কারখানার ভিতর প্রবেশ করেন। ভয়ংকর আগুন থেকে ১১ জনকে উদ্ধারের সময় চোট পান তিনিও। এরপরই দেখা যায়, বেশ কয়েকজন অচেতন শ্রমিককে উদ্ধার করে কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে আসছেন দমকলকর্মীরা। আহতদের লোক নায়ক হাসপাতালে ভরতি করা হয়। একই হাসপাতালে ভরতি রাজেশও। তাঁরও চিকিৎসা চলছে। আক্রান্তদের পরিবারের কাছে এখন রাজেশ এখন দেবদূতসম।

Advertisement

Fire

[আরও পড়ুন: নিরাপত্তার গলদেই এতবড় অগ্নিকাণ্ড, হতাহতদের আর্থিক সাহায্য ঘোষণা দিল্লির]

ইতিমধ্যেই হাসপাতালে গিয়ে রাজেশের সঙ্গে দেখা করেছেন দিল্লির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন। দমকলকর্মীর দায়িত্বজ্ঞান এবং সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। রাজেশের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে টুইটারে লেখেন, “দমকলকর্মী রাজেশ শুক্লা হলেন রিয়েল লাইফ হিরো। ওঁ-ই প্রথম ভিতরে ঢুকে ১১ জনের প্রাণ বাঁচান। চোট পেয়েও শেষ পর্যন্ত নিজের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন। এমন সাহসী নায়ককে কুর্নিশ।”

Fire-inside

এদিকে আগুন লাগার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে শিউরে উঠছেন স্থানীয়রা। ব্যাগ কারখানার পাশের বিল্ডিংয়ের মালিক বলছিলেন, আগুন লাগার পর কীভাবে উন্মাদের মতো এদিক-সেদিক ছুটোছুটি শুরু করে দিয়েছিলেন শ্রমিকরা। কেউ ছাদ থেকে লাফ দিয়ে, তো কেউ চিমনি ধরে বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। স্বাভাবিকভাবেই শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। অনেক আবার হাসপাতালে গিয়েও খোঁজ পাননি পরিবারের সদস্যের। যেমন দিল্লির নূরজাহান। তিনি বলেন, তাঁর বাবা ও জামাইবাবু ওই কারখানাতেই কাজ করতেন। সকাল থেকে চেষ্টা করেও খোঁজ পাননি। একের পর এক আক্রান্তকে আনা হয় লোক নায়ক হাসপাতালে। ফলে অনেক পরিবারকেই হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হতে হয় আক্রান্তদের পরিজনদের। চতু্র্দিকে স্বজনহারাদের হাহাকারে দূষিত দিল্লি যেন আরও মর্মান্তিক হয়ে উঠেছে।

[আরও পড়ুন: দিল্লির আনাজ মান্ডির ছ’তলা বিল্ডিংয়ে ভয়াবহ আগুন, লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা]

Rehan
যে বিল্ডিংয়ে আগুন লাগে তার মালিক রেহান আপাতত পলাতক

দমকল প্রধান অতুল গর্গ জানান, বিল্ডিং চত্বরে অগ্নি নির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। নিরাপত্তার গলদেই ঘটে এতবড় ঘটনা। ইতিমধ্যেই বিল্ডিংয়ের দুই মালিক ইমরান ও রেহানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের খোঁজে চলছে তল্লাশি। এদিকে, বিহারের নেতা সঞ্জয় ঝাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জানান, বিল্ডিংয়ে আটকে পড়া অনেকেই বিহারের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে অন্তত চার-পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিহার সরকারের তরফে পরিবারের হাতে এক লক্ষ টাকা করে তুলে দেওয়া হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement