সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ঘিরে অগ্নিগর্ভ অসম ও ত্রিপুরা। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়েন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়াল। এছাড়াও গুয়াহাটির বিজেপি সাংসদ কুইন ওঝার বাড়িতেও ভাঙচুর চালায় উন্মত্ত জনতা।
সোমবার লোকসভায় বিতর্কিত বিলটি পাশ হওয়ার পর থেকেই আরও চড়েছে বিক্ষোভের পারদ। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে একাধিক পরীক্ষা বাতিল করেছে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার, উত্তর-পূর্ব জুড়ে NESO-র (নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন) ডাকা বনধের দ্বিতীয় দিনে বঙ্গাইগাঁও, গোলঘাট, তিনসুকিয়া, ডিব্রুগঢ়, জোরহাট মজুলি-র মতো জেলাগুলিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। একাধিক দোকানপাটে ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। ডিব্রুগড়ে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন উলফা-র পতাকা উত্তোলন করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। প্রবল বিক্ষোভের জেরে গুয়াহাটিতে এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য পথে বদল করতে হয় মুখ্যমন্ত্রী সনোওয়ালকে। মহানগরীর ছয় মাইল এলাকায় মন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যর কনভয়ে হামলা চালায় বনধ সমর্থকরা। গুয়াহাটির বিজেপি সাংসদ কুইন ওঝার বাড়িতে চড়াও হয় জনতা। গেট ভেঙে তাঁর বাড়ির উঠনেই দাহ করা হয় কুশপুত্তলিকা। তবে, বাংলাভাষী অধ্যুষিত বরাক উপত্যকা ও আদিবাসী অধ্যুষিত কারবি আংলং এবং ডিমা হাসাও জেলাগুলিতে বনধের তেমন একটা প্রভাব পড়েনি।
এহেন পরিস্থিতিতে কোনটার কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়াল। ক্যাব নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আরজিও জনীয়ছেন তিনি। তবে অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন বা আসু-র উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য সাফ জানিয়েছেনম কোনওভাবেই ‘বাংলাদেশি’দের জায়গা দেবে না অসম। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাসের বক্তব্য, ক্যাব নিয়ে অসমের মানুষের শঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
বরপেটায় রাজ্য বিজেপির সভাপতি রঞ্জিত দাস ও ডিব্রুগড়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়ালের বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। গোলঘাট ও তিনসুকিয়া জেলায় রাস্তায় অমিত শাহ-র কুশপুত্তলিকা পোড়ান হয়। উপমুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে বিশ্বাসঘাতক আহোম সেনাপতি বদন বরফুকনের সঙ্গে তুলনা করে বিক্ষোভকারীরা। উল্লেখ্য, আহোম সাম্রাজ্যের সেনপতি ছিলেন বদন বরফুকন। তবে রাজার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বার্মিজ সেনাকে অসম আক্রমণ করার পথ দেখিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই মিরজাফরের সঙ্গে এক সারিতেই রাখা হয় বদনকে। বিক্ষোভকরীদের অভিযোগ, হিমন্ত বিশ্বশর্মাও এবার অসম দখলের জন্য বাংলাদেশিদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। এদিকে, ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা-সহ ও কাঞ্চনপুরে সমস্ত দিন চলে প্রবল বিক্ষোভ। কাঞ্চনপুর ইন্তিমধ্যেই ১৪৪ ধারা লগু করা হয়ছে। বন্ধ ক্রে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবাও। তবে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যায় মণিপুরে। রাজ্যটিকে ইনার লাইন পার্মিট বা আইএলপি-র আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণার পরই মণিপুরবাসীর মধ্যে তুমুল উচ্ছ্বাস দেখা দেয়।
[আরও পড়ুন: গণধর্ষণের পর খুনের চেষ্টা রুখে ধর্ষকদের জেলে পাঠাল নির্যাতিতা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.