সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পথেঘাটে, চায়ের দোকানে সাধারণ মানুষ আলোচনা করেন, অত্যধিক জনসংখ্যাই (Population) দেশের উন্নয়নে অন্যতম বাধা। এই ভাবনা যে ভুল নয়, তা মানেন বিশেষজ্ঞরাও। সেই হিসেবে সুখবর দিল একটি সমীক্ষা। স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের (Sample Registration System) সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, গত এক দশকে ভারতীয়দের মধ্যে সার্বিক প্রজননের হার বা জেনারেল ফার্টিলিটি রেট (General Fertility Rate) ২০ শতাংশ কমেছে। এখন প্রশ্ন হল, জিএফআর (GFR) কী?
জিএফআর হল ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি প্রতি ১০০০ জন মহিলা পিছু সন্তান উৎপাদনের হার। সোজা কথায় এর মাধ্যমে জানা সম্ভব, ঠিক কী পরিমাণ সন্তান উৎপাদন করছেন দেশের মহিলারা। যা থেকে অনুমান করা সম্ভব ভবিষ্যতে ভারতের জনসংখ্যা কোথায় পৌঁছতে পারে। ফলে এই সমীক্ষাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞরা। হিসেব বলছে ২০০৮ থেকে ২০১০— এই তিন বছরে সময়পর্বে ভারতের জিএফআর ছিল ৮৬.১ শতাংশ। পরবর্তী পর্যায়ে ২০১৮-২০ সালের মধ্যে সেই হার অনেকটাই কমে গিয়েছে। কমে দাঁড়িয়েছে ৬৮.৭ শতাংশ।
শিক্ষিতের হার শহরে বেশি। কর্মব্যস্ততাও গ্রামের তুলনায় অনেকটাই বেশি। বয়স বাড়লেও চট করে বিয়ের কথা ভাবেন না শহরের বাসিন্দারা। বিষয়টা ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে শহরে জিএফআর কমেছে ১৫.৬ শতাংশ। অন্যদিকে গ্রামগুলির সমাজচিত্রও যে বদলাচ্ছে, তার প্রমাণ মিলেছে সমীক্ষায়। শহরকে ছাপিয়ে সার্বিক সন্তান উৎপাদনের হার গ্রামে কমেছে ২০.২ শতাংশ। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, রাজ্যগুলির মধ্যে জিএফআর সবচেয়ে কমেছে জন্মু-কাশ্মীরে (২৯.২)। তার পর রয়েছে যথাক্রমে দিল্লি (২৮.৫), উত্তর প্রদেশ (২৪), ঝাড়খণ্ড (২৪) এবং রাজস্থান (২৩.২)।
অন্যদিকে ভারতে মোট প্রজননের হার (টোটাল ফার্টিলিটি রেট) ২। রাজ্যগুলির মধ্যে বিহারে টিএফআর সর্বাধিক ৩। সমীক্ষা জানাচ্ছে, দিল্লি, তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গে টিএফআর হল সর্বনিম্ন ১.৪। সব মিলিয়ে মনে করা হচ্ছে জিএফআর কমায় দেশের জনবিস্ফোরণ আগামী দিনে কিছুটা কমবে। তার সুফল পাবে দেশ। যদিও ক’দিন আগে একটি সমীক্ষায় রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছিল, ভবিষ্যতে ভারতে জনসংখ্যা কমার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছিল, আগামী ৭৮ বছরে ভারতের জনসংখ্যা কমবে ৪১ কোটি। সার্বিক প্রজনন ক্ষমতা কমার জন্যই যে জনসংখ্যা কমবে, তাও বলা হয়েছিল ওই সমীক্ষায়। তবে ভারতীয়রা যে আগের মতো করে সন্তান চাইছেন না, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের সমীক্ষায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.