সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামান্য কোনও অপরাধেই অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি তোলাটা যখন এদেশে দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন এই বিরল দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন এক সন্তানহারা পিতা। নিজের সন্তানের হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিলেন তিনি। সন্তানহারা পিতার আবেদনে সাড়া দিয়ে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত চার যুবককে মুক্তি দিয়েছে আদালতও। ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লিতে।
[মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হেড কনস্টেবল]
জানা গিয়েছে, নিহত সানি নামে ওই যুবক পেশায় ছিলেন গাড়ি চালক। ২০১২ সালে ২৮ এপ্রিল সানি ভুল জায়গায় গাড়ি রাখলে, প্রতিবাদ করেন রাহুল, সঞ্জীব, দীপক ও রাজা নামে আরও চার গাড়ির চালক। এই নিয়ে শুরু হয় বচসা। সানিকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন ওই চারজন। ঘটনার সময়ে সেখানে হাজির ছিলেন সানির ভাইও। তাঁর দাবি, তিনি ওই চারজনকে থামাতে গিয়েছিলেন। এরপরই সানিকে পাথর দিয়ে সজোরে আঘাত করে সঞ্জীব। গুরুতর আহত অবস্থায় সানিকে প্রথমে দিল্লির এইমস-এ নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শয্যা খালি না থাকায় তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তিন দিন পর মারা যান সানি।
[গণপিটুনিতে পুলিশের মৃত্যু, প্রতিবাদে পুরস্কার ফেরালেন সমাজকর্মী]
আদালতে সাক্ষী হিসেবে নিহতের ভাইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী। তিনি দাবি করেন, পথচলতি বহু মানুষ হয়তো এই ঘটনাটি দেখেছিলেন। কিন্তু তাদের কাউকে সাক্ষী হিসেবে আদালতে পেশ করা হয়নি। আসল ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে শুধুমাত্র নিহতের ভাইকেই সাক্ষী সাজানো হয়েছে। যদিও শেষপর্যন্ত নিহতের ভাইয়ের বয়ানের ভিত্তিতেই অভিযুক্ত রাহুল, সঞ্জীব, দীপক ও রাজাকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। তিনি বলেন, অভিযুক্তরা হয়তো সানিকে প্রাণে মেরে ফেলতে চায়নি। কিন্তু তারা ভালভাবেই জানত, যে মারধরের ফলে সানির মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু শেষপর্যন্ত অবশ্য নিহতের বাবা ক্ষমা করে দেওয়ায় দোষী সাব্যস্ত চার যুবককে সাজা দিল না আদালত। বিচারক বলেন, দোষী সাব্যস্তরা ইতিমধ্যেই নিহতের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। নিহতের বাবা বলেছেন, ওই চার যুবক তাঁর সন্তানের মতো এবং তিনি তাদের ক্ষমা করতে প্রস্তুত। তাই ওই চার যুবক নিজেদের শুধরে নেবে এবং সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে, তার যখেষ্ট সম্ভাবনা আছে।
[পোশাকের জন্য অভিজাত ক্লাবে চরম অপমানিত মহিলা আমলা]
আপাতত দোষী সাব্যস্ত চার যুবককে ২৫ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, নিহতের বাবাকে ছ’লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মুক্ত থাকাকালীন, পুলিশের কড়া নজরদারিতে থাকবেন ওই চার যুবক। প্রোবেশন মুক্তির সয়মসীমা শেষ হওয়ার পরই, তাদের পুরোপুরি মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.