সংবাদ প্রতিদিন ডিডিটাল ডেস্ক: দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে শয্যাশায়ী পুত্র হরিশ। কলেজে পড়ার সময় দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন, তারপর থেকেই আক্রান্ত স্নায়ুর অসুখে। তার শরীর পুরোপুরি পক্ষাঘাতগ্রস্ত। এদিকে বৃদ্ধ বাবা এখন মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা পেনশন পান। সংসার চালাতে স্ত্রীর সাহায্যে স্যান্ডউইচ তৈরি করে পাড়ায় বিক্রি করেন। ছোট ছেলে নামমাত্র বেতনে চাকরি করে। দিনের পর দিন ছেলের অসহনীয় যন্ত্রণা বাড়তে দেখা, নিজেদের আর্থিক অনটন আর মানসিক চাপে জেরবার হয়ে শেষ পর্যন্ত দিল্লি হাই কোর্টে ছেলের ইচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানিয়েছিলেন ৬২ বছরের রানা এবং তাঁর স্ত্রী নির্মলা দেবী।
নিজেদের সমস্ত প্রতিকূলতার বৃত্তান্ত জানিয়ে চেয়েছিলেন, মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে ছেলেকে নিষ্কৃতি-মৃত্যু দেওয়া হোক। কিন্তু আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। গত ৮ জুলাই দিল্লি হাই কোর্ট রানা এবং নির্মলা দেবীর আবেদন নাকচ করে দেয়। সঙ্গে জানিয়ে দেয়, এদেশের আইন ইচ্ছামৃত্যুর (প্যাসিভ ইউথানাসিয়া তথা নিষ্কৃতি-মৃত্যু ) অনুমতি দেয় না।
মোহালির চণ্ডিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন হরিশ। ২০১৩ সালে কলেজের চার তলা থেকে পড়ে যান তিনি। প্রাণরক্ষা হলেও শরীরের প্রায় সমস্ত অঙ্গ অকেজো হয়ে যায়। মাথার আঘাত ছিল গুরুতর। দুর্ঘটনা নিয়ে ‘রহস্য’ রয়েছে বলেই পরিবারের দাবি। থানায় এফআইআর করেন হরিশের বাবা রানা।
ছেলের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ দিন চণ্ডিগড়ের পিজিআইতে হরিশের চিকিৎসা হয়েছে। তার পর এমস, রামমনোহর লোহিয়া, লোকনায়ক এবং দিল্লির ফর্টিস হাসপাতালে দেখানো হয়েছে। যদি শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। ১১ বছরের বেশি সময় বিছানা থেকে ওঠেননি হরিশ। অন্যদিকে চিকিৎসার বিপুল ব্যয়ভার বহনেরও ক্ষমতা নেই পরিবারের। এই অবস্থায় প্রতি দিন ছেলেকে একটু একটু করে বিছানার সঙ্গে মিশে যেতে দেখে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রানা এবং নির্মলা দেবী। যদিও তাঁদের আর্জি খারিজ হয়ে গেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.