নন্দিতা রায়: একেই হয়তো বলে রাজনীতি! সাতসকালে সংসদ চত্বরে ধরনারত সাংসদদের সঙ্গে দেখা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলা এবং তাঁদের নিজের হাতে চা পান করানো। আর তারপরই ২৪ ঘণ্টার অনশনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেওয়া। বিরোধীদের ধরনার রাজনীতির পালটা এই চাল দিয়ে বিহার ভোটের আগে এনডিএ শিবিরে রীতিমতো হিরো বনে গেলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং। সুযোগ বুঝে টুইট করে ‘বিহার তাস’ খেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
আসলে ‘জোর করে’ কৃষি বিল পাশ (Farm Bill 2020), এবং ‘বেআইনিভাবে’ সাসপেন্ড করার অভিযোগে রাতভর সংসদের গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায় রাজ্যসভার (Rajya Sabha) আট সাংসদ। গণতন্ত্রের পীঠস্থান সংসদের ‘মর্যাদা লঙ্ঘনের’ অভিযোগে গতকালই এদের ৭ দিনের জন্য সাসপেন্ড করেন চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নায়ডু। যার প্রতিবাদে কাল দুপুরেই গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেন বিরোধী সাংসদরা। আজ সকালে এই ধরনারত সাংসদদের রীতিমতো ‘সারপ্রাইজ’ দেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান। নিজে চলে যান গান্ধীমূর্তির পাদদেশে। বিরোধী সাংসদদের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের চা খাওয়ান। অনেকেই তাঁর এই সৌজন্যের প্রশংসা করা শুরু করেন। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) টুইট করেন।
‘বিহারী’ সাংসদ হরিবংশের পাশাপাশি তিনি দেশের গনতন্ত্র রক্ষায় বিহারীদের ভূমিকারও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। টুইটে মোদি বলেন,”দু’দিন আগেই যারা অপমান করেছে, আক্রমণ করেছে, তাঁকে অপরাধী প্রমাণ করার জন্য ধরনায় বসেছে, তাঁদের নিজের হাতে চা খাইয়ে হরিবংশজি (Harivansh Narayan Singh) বুঝিয়ে দিলেন, তিনি অনেক বড় মনের মানুষ, এটা তাঁর উদারতা এবং মহানতার পরিচয়। সমস্ত ভারতবাসীর পাশাপাশি আমিও তাঁকে শুভেচ্ছে জানাতে চাই।” মোদি বলছেন, “কয়েক শতক ধরেই বিহার আমাদের গণতন্ত্রের অর্থ বুঝতে শিখিয়েছে। আজ বিহারের সাংসদ এবং রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান যে সৌজন্যের নজির গড়লেন তা গণতন্ত্রপ্রেমীদের গর্বিত করবে।” নিন্দুকেরা অবশ্য বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর টুইটে একাধিকবার বিহারের উল্লেখ থেকেই বোঝা যায়, সামনে বিহারের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই টুইটটি করা।
এ তো গেল প্রথম পর্ব। প্রধানমন্ত্রীর এই টুইটের কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় রাজ্যসভার নাটকের দ্বিতীয় পর্ব। ডেপুটি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন, রবিবার সাংসদরা তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করেছেন সেজন্য তিনি ব্যথিত। তাই একদিনের জন্য অনশন করতে চান। ধরনার পালটা অনশনের এই চালে দিশেহারা বিরোধীরা আবার রাজ্যসভার অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা গুলাম নবি আজাদ জানিয়ে দিয়েছেন, ওই আট সাংসদের সাসপেনশন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অধিবেশনে যোগ দেবেন না।এরপরই ওয়াক আউট করেন বিরোধী সাংসদরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.