সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ-এক বেদনার তারে যেন আজ বাঁধা পড়েছে আলাদা আলাদা রাজ্যগুলি। এ বেদনা স্বজন হারানোর। উরিতে সন্ত্রাস হামলায় শহিদ জওয়ানদের মরদেহ আজ ফিরছে ঘরে ঘরে। আর শোক সামলে কঠোর মুখে সন্ত্রাসিদের সাজার দাবিতে যেন একজোট পরিজনরা।
উরি হামলায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২০ জন জওয়ান। ঘুমন্ত সেনা ছাউনি লক্ষ করে গ্রেনেড ছোড়ে জয়েশ জঙ্গিরা। ফলে পাল্টা প্রতিরোধ করার আগেই মৃত্যু হয় বেশ কয়েকজন ভারতীয় সেনার। এর মধ্যেই আছেন পশ্চিমবঙ্গের সেপাই গঙ্গাধর দলুই ও বিশ্বজিত ঘড়াই। দু’দিন আগেই সেপাই দলুই তাঁর মাকে শুনিয়েছিলেন বোমাবর্ষণের কথা। আশঙ্কা করেছিলেন, জঙ্গিরা বোধহয় তাদের বাঁচতে দেবে না। সে কথাই যেন অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হল। শোকে আকুল মা-বাবা। তবু চোখের জল মুছে তাঁদের প্রার্থনা, হামলাকারীদের কঠোরতম শাস্তি হোক।
একই ছবি মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতেও। ২৭ বছরের সিপাই উইকে জানরাওয়ের মরদেহ আজ পৌঁছচ্ছে তাঁর পরিজনদের কাছে। ছ’দিন আগেই বাড়ির সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। উত্তরপ্রদেশে ৪ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন এই হামলায়। রাজস্থানে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। ফারাক শুধু রাজ্যের নামে, পরিবেশটা মোটের উপর একই। থমথমে, শোকবিহ্বল। কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। তীব্র শোকের ভিতর থেকে দিকে দিকে জেগে উঠছে একটাই দাবি-হামলাকারীদের শাস্তি। গতকালই প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছিলেন এই বলে যে, যারা এই কাপুরুষোচিত আক্রমণ করেছে তারা রেহাই পাবে না। ক্রুদ্ধ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক মহলে একঘরে করার ডাক দিয়েছিলেন। সে প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীরও সবুজ সংকেত মিলেছে। নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে, আর কতদিন পাকিস্তানের এই আক্রমণ সহ্য করবে ভারত। সীমান্তে যা চলছে তা তো যুদ্ধের এক ছোট সংস্করণ ছাড়া অন্য কিছু নয়। এক্ষেত্রে শান্তি ফেরার অপেক্ষায় বসেই থাকবে দেশ, নাকি প্রত্যাঘাত হানার সিদ্ধান্ত নেবে। প্রশাসনের উর্ধ্বস্তরেও এরকম অপারেশন নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। আর তাই প্রিয়জনকে হারানোর পর মূলচক্রীদের শাস্তির আশাতেই বুক বাঁধছেন সব রাজ্যের স্বজন হারানো মানুষরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.