সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনকে টেক্কা দিতে এবার রাশিয়াকে পাশে চাইছে ভারত। এই মর্মে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে রাশিয়া ও জাপানের সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে তৎপর হয়েছে নয়াদিল্লি।
জানা গিয়েছে, আগস্টের ৪ তারিখ রাশিয়ার ডেপুটি বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রীঙ্গলা। সূত্রের খবর, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে টোকিও ও মস্কোকে সঙ্গে নিয়ে একটি অক্ষ গড়তে তৎপর হয়েছে নয়াদিল্লি। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ওই অঞ্চলে চিনা আগ্রাসন রুখে দিয়ে বাণিজ্যিক ও সামরিক নিরাপত্তা বজায় রাখা। বলে রাখা ভাল, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বলতে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, ফিজি, লাওস, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, মালয়েশিয়াম, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা-সহ প্রায় ২১টি দেশ বোঝায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত সফরে এসে মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির প্রধান স্তম্ভ ভারত বলে উল্লেখ করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিনকে নজরে রেখে এই অঞ্চলে আমেরিকাও তৎপর।
এদিকে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একাধিক দেশ যেমন–ভিয়েতনাম, মায়ানমার, ব্রুনেই কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড Association of Southeast Asian Nations বা ASEAN গোষ্ঠীভুক্ত। সদস্য না হলেও এই গোষ্ঠীর পর্যবেক্ষক পদে রয়েছে ভারত। এই গোষ্ঠীটির সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্কও ভাল। সূত্রের খবর, ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিকল্পনা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে রাশিয়ার মনে। এই প্রকল্পটি আসলে চিনকে একঘরে করে ফেলতে তৈরি বলে মনে করছে মস্কো। এবং ভারতের সঙ্গে আমেরিকার দহরম মহরম দেখে চিনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে চাইছে না রাশিয়া। এনিয়ে কূটনীতির পর্দার আড়ালে বিস্তর টানাপোড়েন চলছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ নাম নিয়েই আপত্তি রয়েছে মস্কোর। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরোভ সাফ বলেছিলেন, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বর্তমান পরিকাঠামো বদলে চিনকে একঘরে করে ফেলার উদ্দেশ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে মাতামাতি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ASEAN কেন্দ্রিক সমঝোতা থেকে দূরে চএল যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, গত বছর রাশিয়ার সুদূর পূর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেদনর মোদি ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সফরে প্রথম তিন দেশের মধ্যে নতুন পরিকাঠামো নয়ে আলোচনা হয়েছিল। ইতিমধ্যে জাপানের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও আফ্রিকায় একাধিক প্রকল্পে কাজ করছে ভারত। এবার রাশিয়া সঙ্গী হলে সেই পপ্রকল্প আরও গতি পাবে এবং চিন কোণঠাসা হয়ে পড়বে। তবে বিষয়টা যে অতটা সহজ নয় বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির উষ্ণ সম্পর্ক যথেষ্ট সন্দেহ তৈরি করেছে মস্কোর মনে। তা কতটা কাটিয়ে উঠতে পারবে ভারত, সময়ই বলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.