সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেস সভাপতির রোড-শো’তে বিস্ফোরণ! জবলপুরে বরাতজোরে বাঁচলেন রাহুল গান্ধী। শনিবার মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে ভোট-প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন রাহুল। আট কিলোমিটার এলাকা ধরে চলছিল বর্ণাঢ্য সেই রোড-শো। হুড খোলা জিপে দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়তে নাড়তে এগোচ্ছিলেন রাহুল। ঠিক এইসময়ই জ্বলন্ত প্রদীপ হাতে ধরে, তা দিয়ে কংগ্রেস সভাপতিকে বরণ করতে শুরু করেন একদল সমর্থক। তখনই অন্যদিকে সমর্থকদের অন্য একটি দল অতি-উৎসাহের চোটে হাতে গ্যাস বেলুন নিয়ে দ্রুত সে দিকে এগিয়ে আসে। গ্যাস বেলুনে স্পর্শ লাগে প্রদীপ-শিখার। মুহূর্তের মধ্যে ঘটে সশব্দে বিস্ফোরণ। তৈরি হয় বিরাট বড় একটা আগুনের গোলা। ওই সময় অকুস্থলের ঠিক পাশেই ছিল রাহুলের খোলা জিপ। বিস্ফোরণের জোরালো শব্দ এবং আগুনের লেলিহান শিখা দেখে হকচকিয়ে যান কংগ্রেস সভাপতি। কিছুটা পিছিয়ে যান তিনি।
তাঁর গাড়ির চারপাশে থাকা লোকজনও ভয়ের চোটে দৌড়াদোড়ি শুরু করে দেন। তুমুল বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় ঘটনাস্থলে। তবে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানেই অবশ্য নিভে যায় সেই আগুন। হতাহতের বা ক্ষয়ক্ষতির খবরও নেই। রাহুল নিজেও অক্ষত আছেন। সুরক্ষিত আছেন জিপে তাঁর ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং কমল নাথও। তবু, এদিনের ঘটনা ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে।
জবলপুর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, “এদিনের ঘটনায় নিরাপত্তার কোনও ঘাটতি ছিল না। রাহুল গান্ধীর গাড়ি থেকে ১৫ ফুট দূরত্বে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা তদন্ত করে দেখেছি, কারও কোনও চোট-আঘাত লাগেনি। তবে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এরপর থেকে কোনও জনসভায় বেলুন এবং প্রদীপ নিয়ে যাওয়া যাবে না।’’ তবে ঘটনা হল, রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তা নিয়ে এর আগে একাধিকবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে কংগ্রেস। এর পালটা হিসাবে আবার কেন্দ্র জানিয়েছে, রাহুল প্রায়ই প্রোটোকল ভাঙেন। দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছিলেন, গত দু’বছরে রাহুল ১২১টি সফর করেছিলেন। কিন্তু তার মধ্যে প্রায় একশোটিতেই তিনি বিধি মেনে বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করেননি। তবে এদিনের ঘটনা ঘিরে কংগ্রেস সভাপতির নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ দেখা দেয়। এর আগে ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী খুন হয়েছিলেন তাঁরই দেহরক্ষীদের হাতে। পুত্র সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যু হয়েছিল বিমান দুর্ঘটনায়। ঘটনায় নাশকতার যোগসূত্র পেয়েছিলেন অনেকেই। আবার ইন্দিরার জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজীব গান্ধীকেও খুন করা হয়েছিল ১৯৯১ সালে। রাহুলের নিরাপত্তা নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.