Advertisement
Advertisement

Breaking News

কীভাবে কাশ্মীরে গোয়েন্দাদের নজর এড়িয়েছিল জঙ্গিরা? ফাঁস চাঞ্চল্যকর তথ্য

সিআরপিএফের কনভয়ে এমন নিখুঁতভাবে টাইমিং করে কীভাবে ধাক্কা মারতে পারল বিস্ফোরক বোঝাই সেডান গাড়ি?

Explosive revelation on Pulwama attack
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:February 19, 2019 9:10 am
  • Updated:February 19, 2019 9:10 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেনা গোয়েন্দা বা ভারতীয় ইন্টেলিজেন্স যদি যায় ডালে ডালে তাহলে জঙ্গিরা যায় পাতার শিরায় শিরায়। পুলওয়ামা কাণ্ডের তদন্তে এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তা দেখে যে কারও এমনটাই মনে হতে পারে। সিআরপিএফের কনভয়ে এমন নিখুঁতভাবে টাইমিং করে কীভাবে ধাক্কা মারতে পারল বিস্ফোরক বোঝাই সেডান গাড়ি? কীভাবে জঙ্গিরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ট্র‌্যাক রাখতে পারছিল সিআরপিএফের কনভয় কখন কোন দিক দিয়ে যাচ্ছে সে ব্যাপারটি।
এনআইএ তদন্তে জানা গিয়েছে, অত্যাধুনিক ডার্ক ওয়েব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে হামলা। সিম কার্ড নয়। গোয়েন্দাদের নজর এড়াতে বেতার তরঙ্গের সাহায্যে সাংকেতিক মেসেজ আদানপ্রদান করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখছিল জঙ্গিরা। রাওয়ালপিণ্ডির সেনা হাসপাতালে শুয়েই হামলার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছিল জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহার। হামলার দায়িত্ব পায় মাসুদ ঘনিষ্ঠ কামরান ওরফে গাজি। এই অপারেশনের জন্য আদিল আহমেদকেই আত্মঘাতী জঙ্গি হিসাবে নির্বাচিত করে কামরান। পাকিস্তান থেকে এতবড় একটা হামলার ছক কষা হচ্ছে, গোয়েন্দাদের কাছে যাতে এতটুকু তথ্য ফাঁস না হয়, তার জন্য আগাগোড়া সতর্ক ছিল জঙ্গিরা।

[‘বড়া কাম হোনা চাহিয়ে’, নির্দেশ ছিল জেহাদি গাজির উপর]

Advertisement

এনআইএ সূত্রে খবর, প্রচলিত সিমকার্ড নয়। অত্যাধুনিক ডার্ক ওয়েব প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল জঙ্গিরা। গোয়েন্দা নজরদারি এড়াতে ‘পিয়ার টু পিয়ার’ সফটওয়্যারের সাহায্যে ওয়াইএসএমএসের মাধ্যমেই নিজেদের মধ্যে সাংকেতিক বার্তা আদানপ্রদান করত জঙ্গিরা। হামলার পর সেরকমই দু’টি বার্তা উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। একটিতে লেখা ছিল, ‘জইশ-ই-মহম্মদের সফল হয়েছে।’ অন্য বার্তায় লেখা ছিল, ‘হামলায় অসংখ্য ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু, ধ্বংস একাধিক গাড়ি।’ উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে দুই ব্যক্তির মধ্যে সাংকেতিক ভাষায় ওয়াইএসএমএস পাঠানো হয়। যার মূল মাধ্যম হল রেডিও সেট। সিডিএমএ মোবাইল হ্যান্ডসেটের সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি রেডিও সেট। আর সেই রেডিও সেটের বেতার তরঙ্গকেই ওয়াইফাই হিসেবে ব্যবহার করে বার্তা (ওয়াইএসএমএস) পাঠানো হয়। এর ফলে মেসেজের গোপনীয়তাই রক্ষা করা সম্ভব হয়। একইসঙ্গে গোয়েন্দাদের রেডারেও তা ধরা পড়ে না। সেনা গোয়েন্দাদের টেলি কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়াই এসএমএস হল অতি উচ্চ রেডিও কম্পাঙ্ক (আল্ট্রা হাই রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি)। ওই প্রযুক্তির সাহায্যে এনক্রিপটেড মেসেজ পাঠানো সম্ভব। সহজ ভাষায়, একটি রেডিও সেটের সঙ্গে সিমকার্ডহীন একটি মোবাইলকে সংযুক্ত করা হয়। তবে সেই রেডিও সেটে থাকতে হবে ওয়াই ফাইয়ের সুবিধা। সেনার বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই প্রযুক্তি সবচেয়ে বেশি কার্যকর যখন বার্তার প্রেরক এবং গ্রাহকের রেডিও সেট মোটামুটি দৃষ্টিসীমার মধ্যে থাকে সরলরেখায় থাকে এবং মাঝখানে কোনও বড় বাধা থাকে না।

২০১২ সাল থেকে সক্রিয় ছিল ডার্ক ওয়েব প্রযুক্তি। জইশ জঙ্গিরা ওই প্রযুক্তির উপর আরও এনক্রিপশন যুক্ত করে সেটি আরও উন্নত করে নিয়েছে বলে দাবি সেনা গোয়েন্দাদের। পাক ভূখণ্ডে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলি এই প্রযুক্তির অত্যাধুনিক সংস্করণ ব্যবহার করে। যার মধ্যে অন্যতম লস্কর এবং জইশ। ২০১৫ সালে পাক জঙ্গি সাজ্জাদ আহমেদকে গ্রেপ্তারের পর ওয়াইএসএমএস প্রযুক্তি সামনে আসে। তবে এখনও তার কোড উদ্ধার করতে পারেনি ভারতীয় সেনা। গোয়েন্দারা স্বীকার করেছেন, উচ্চ কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে মেসেজ পাঠানো হয় বলে মোবাইল, রেডিও টেলিফোন বার্তার উপর নজরদারি করতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তা দিয়ে ওই বার্তা চালাচালি ধরা সম্ভব নয়। সে কারণেই সম্ভবত পুলওয়ামা হামলার আগাম কোনও আঁচ পাননি গোয়েন্দারা। এই প্রযুক্তির ব্যবহার ফের প্রকাশ্যে আসায় এবার ওয়াইএসএমএস কে কী ভাবে নজরদারির আওতায় আনা যায় তা নিয়ে চেষ্টা করছেন সেনাবাহিনীর প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

[ভোটের মুখে কেন্দ্রকে ২৮ হাজার কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা রিজার্ভ ব্যাংকের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement