দীপাঞ্জন মণ্ডল, নয়াদিল্লি: অবসর গ্রহণের ২০ দিন আগে শুক্রবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন দমকল, হোমগার্ড ও অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের শীর্ষকর্তার পদ ফিরিয়ে ইস্তফা দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন অলোক ভার্মা। শনিবার সকালে সামনে এল নতুন তথ্য। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এ কে পট্টনায়ক জানিয়ে দিলেন, “অলোক ভার্মাকে সরিয়ে দেওয়া ‘হঠকারী সিদ্ধান্ত’। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও ‘প্রমাণ’ই মেলেনি।” এখানেই শেষ নয়। একটি ইংরেজি সংবাদ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিচারপতি পট্টনায়েক আরও জানান, “প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটির দ্বারা যেভাবে অলোক ভার্মাকে পদচ্যুত করা হল তা অত্যন্ত তাড়াহুড়ো করে নেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয় সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে। ভার্মার বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাইয়ে গঠিত সিভিসি-র অন্যতম সদস্য ছিলেন পট্টনায়েক। তাঁর নজরদারিতেই তদন্ত হয়েছিল। পরে অলোক ভার্মাকে সিবিআই অধিকর্তার পদ থেকে সরিয়ে দমকল দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি এই নতুন দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে শুক্রবারই সরকারকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর অলোক ভার্মা বলেন, “সমস্ত বিচারপ্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করে দিয়ে স্রেফ একটি মানুষকে সরানোর জন্য যে নাটক রচিত হল, তা সত্যিই বিস্ময়কর।” তবে শুধু ইস্তফা দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি অলোক ভার্মা। পদত্যাগপত্রে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্যও করেন তিনি। ভার্মার দাবি, তাঁর অপসারণে স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া লঙ্ঘিত হয়েছে। শত্রুভাবাপন্ন ব্যক্তির অন্যায় ও তুচ্ছ অভিযোগে তাঁকে সরানো হয়েছে। তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। কেন্দ্র সিবিআইয়ের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। অন্যদিকে, সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন আবার পিএনবি দুর্নীতি কাণ্ডে বিঁধেছেন অলোক ভার্মাকে। সিভিসি-র দাবি, পিএনবি দুর্নীতি কাণ্ডে গোপন ইমেল লিক হওয়ার তথ্য চেপে গিয়েছিলেন ভার্মা। এছাড়াও, পলাতক বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে যে লুক আউট সার্কুলার জারি হয়েছিল, তা-ও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ফলে সহজেই দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন মালিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.