সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার দেশজুড়ে বায়ুসেনা দিবস পালিত হল। ১৯৩২-এর ৮ অক্টোবর অবিভক্ত ভারত থেকে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, ৮৬ বছর পরেও তা একই ভাবে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে৷ এই দীর্ঘ যাত্রা পথে রয়েছে প্রচুর জওয়ানের আত্মবলিদান৷ শহিদের রক্তে মিলেছে স্বাধীনতা স্বাদ৷ দেশবাসীর মনে অমর হয়ে রয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকেই৷ যাঁদের মধ্যে প্রথমেই মনে পড়ে এয়ার চিফ মার্শাল ইদ্রিস হাসান লতিফের নাম৷ যাঁকে বায়ুসেনায় শীর্ষপদে আসীন হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল তৎকালীন পাক প্রশাসন৷ কিন্তু সেই লোভকে পরিত্যাগ করে কর্মজীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনার উর্দি গায়ে চড়িয়ে কাজ করে গিয়েছেন তিনি৷ চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ৯৪ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতের এই বীর জওয়ান৷ ভারতীয় বায়ুসেনার প্রতিষ্ঠা দিবসে তাঁকে স্যালুট!
[পাকিস্তানের হাতে ব্রহ্মস মিসাইলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য! গ্রেপ্তার আইএসআই চর]
১৯২৩-র ৯ জুন অবিভক্ত ভারতের হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন ইদ্রিস হাসান লতিফ। সাড়ে সতেরো বছর বয়সে ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন তিনি৷ ১৯৪১-এ সুযোগ পান৷ এরপর শুরু হয় তাঁর প্রশিক্ষণ৷ অবিভক্ত ভারতের করাচিতে পোস্টিং করা হয় তাঁকে৷ এরপর ১৯৪৩-তে ব্রিটেনে বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য পাঠান হয় তাঁকে৷ ব্রিটিশ সেনার ব়্যাফ স্কোয়াড্রনে যোগে দেন তিনি৷ এরপর ১৯৪৪-এ বার্মা ফ্রন্টে যোগ দেন তিনি৷ সেখানে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করার পর সাবেক মাদ্রাজে পাঠানো হয় তাঁকে৷ সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় আশগর খানের৷ যিনি পরবর্তীকালে পাক বায়ুসেনা প্রধান হন৷ ১৯৪৬-এ ভারতীয় সেনার হয়ে ব্রিটেনে বিশেষ প্যারেডে অংশ নেন তিনি৷
[অশান্তির আবহে পুরনির্বাচন, গণতন্ত্রের উৎসবে সাড়া মিলল না ভোটারদের]
এরপর ভারতীয় রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে৷ দেশভাগের আবহে, দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় ইদ্রিস হাসান লতিফকে৷ শোনা যায় তখনই তাঁকে পাক বায়ুসেনায় যোগদানের জন্য জোর করেন আশগর খান ও নুর খান৷ কিন্তু তাঁদের সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ইদ্রিস হাসান লতিফ৷ ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দেন তিনি৷ এরপর ১৯৫০-এর ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রথম সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজেও অংশগ্রহণ করেন তিনি৷ ১৯৬৫-তে তাঁর রণকৌশলেই পাকিস্তানকে পরাস্ত করে ভারত৷ ১৯৭১-এ ভারত-চিন যুদ্ধেও ভারতীয় বায়ুসেনাকে নেতৃত্ব দেন তিনি৷ ১৯৭৮-এ প্রথম মুসলিম বায়ুসেনা প্রধান হন লতিফ৷ ভারতীয় সেনায় জাগুয়ার ও মিগ যুদ্ধবিমানের অন্তর্ভুক্তি প্রক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন প্রাক্তন এয়ার চিফ মার্শাল ইদ্রিস হাসান লতিফ৷ অবসরের পর মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল পদে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত কাজ করেছেন তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.