Advertisement
Advertisement
অরুণ জেটলি

ছিলেন বিজেপির ক্রাইসিস ম্যানেজার, নিজেকে প্রণবের ‘ফ্যান’ বলতেন অরুণ জেটলি

দুই নেতার অবস্থান একেবারে বিপরীত মেরুতে হলেও, ব্যক্তিগত সম্পর্কের সমীকরণ ছিল অসাধারণ।

Ex finance minister Arun Jaitley claimed himself a fan of Pranab Mukjerjee
Published by: Tanujit Das
  • Posted:August 25, 2019 11:56 am
  • Updated:August 25, 2019 12:00 pm

নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: রাজনৈতিক মহলে অরুণ জেটলিকে বলা হত বিজেপির ‘প্রণব মুখোপাধ্যায়’! প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণববাবু যেমন দীর্ঘদিন কংগ্রেসের ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’-এর ভূমিকা পালন করেছেন, ঠিক তেমনই জেটলিকেও বিজেপির অন্দরে সেই ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। জেটলি নিজেও তাঁর সঙ্গে প্রণববাবুর তুলনাটা পছন্দ করতেন বলেই দিল্লির রাজনৈতিক মহলের আনাচে কানাচে শোনা গিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে দুই নেতার অবস্থান একেবারে বিপরীত মেরুতে হলেও, তাঁদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের সমীকরণ ছিল অসাধারণ। নিজেকে প্রকাশ্যেই প্রণববাবুর ‘ফ্যান’ বলতেন জেটলি। সঙ্গে ফ্যান ছিলেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীরও।

[ আরও পড়ুন: জেটলির শেষযাত্রা Live Update: বিজেপির সদর দপ্তরে পৌঁছল প্রয়াত অর্থমন্ত্রীর মরদেহ ]

Advertisement

২০১৬-র এক সাক্ষাৎকারে জেটলি নিজেই বলেন, “যখন আপনি এই দুই নেতার (বাজপেয়ী এবং প্রণব) সঙ্গে দেখা করবেন তখন দীর্ঘক্ষণ আপনার মধ্যে সেই রেশ থাকবে।” রাজ্যসভার দলনেতা থেকে ২০১৪-তে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পদ সামলানোর সময়েও রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রণববাবুর কাছে দেখা করতে যেতেন জেটলি। সেই সাক্ষাৎ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সৌজন্যমূলক সম্পর্কের চেয়ে ব্যক্তিগতই বেশি ছিল বলেই শোনা যায়। এমনকী, প্রণববাবুর রাষ্ট্রপতি হিসাবে সময়সীমা শেষের পরে তাঁর ১০ নম্বর রাজাজি মার্গের বাসভবনেও নাকি নিয়মিত যেতেন জেটলি। পণ্য ও পরিষেবা কর চালুর আগে থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে অর্থমন্ত্রী জেটলি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রণববাবুর কাছে পরামর্শ নেওয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে হাজির হতেন বলেও অনেকবার শোনা গিয়েছে।

[ আরও পড়ুন: মণিপুর থেকে বাজেয়াপ্ত ৪১০ কোটি টাকার মাদক, গ্রেপ্তার পাঁচ ]

জেটলির সঙ্গে প্রণববাবুর ব্যক্তিগত সর্ম্পকের আঁচ মিলেছে শনিবার প্রণববাবুর টুইটেও। একদিন আগেই তিনি অসুস্থ জেটলিকে দেখতে এইমসে গিয়েছিলেন। সেকথা উল্লেখ করে কংগ্রেসের চাণক্য লিখেছেন, জেটলির অভাব তিনি তীব্রভাবে অনুভব করবেন। জেটলির সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের যোগাযোগ এবং সব সময়েই তাঁদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হত বলেও মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। টুইটে শোকবার্তা জানানোর পাশাপাশি জেটলির স্ত্রী সঙ্গীতাকেও চিঠি লিখে শোকপ্রকাশ করেছেন এবং সহানুভূতি জানিয়েছেন প্রণববাবু। দুই নেতার ব্যক্তিগত সমীকরণ কোন স্তরের ছিল সেই সংক্রান্ত বহু ঘটনার সাক্ষী রাজ্যসভাও।

[ আরও পড়ুন: লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম থেকে ফিরেছিলেন আত্মীয়, ‘মিরাকল’-এ অটুট ভরসা ছিল জেটলির স্ত্রীর ]

সংসদ ‘কভার’ করার সুবাদে এমনই এক ছোট একটি ঘটনার সাক্ষী হওয়ার সুযোগও মিলেছিল। তখন দ্বিতীয় ইউপিএ জমানা। ২০১১-র সংসদের বাজেট অধিবেশন। রাজ্যসভায় বাজেটের উপর আলোচনা চলছে। বক্তা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি। উলটোদিকে ট্রেজারি বেঞ্চে বসে আছেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। চাঁচাছোলা ভাষায়, তীক্ষ্ণ যুক্তিজালে ইউপিএ সরকারের বাজেটের সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রীর দিকে জেটলি নিশানা করে চলেছেন ক্রমাগত। যাঁকে লক্ষ্য করে তাঁর এই বাক্যবাণ, তিনি তখন মন দিয়ে জেটলির বক্তব্য শুনছেন। সঙ্গে নোট করছেন মাঝেমাঝে। ঘণ্টাখানেকের বক্তব্য শেষ করে জল খেলেন জেটলি। রাজ্যসভায় আর বেশিক্ষণ থাকতে পারবেন না বলে, দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে টুকটাক কথা সারলেন। উঠব উঠব ভাব, কিন্তু একেবারে আসন ছেড়ে তখনও উঠে পড়েননি।

রাজ্যসভার প্রেস গ্যালারি থেকে চোখে পড়ল জেটলি তাকিয়ে আছেন প্রণববাবু দিকে। মাথা নাড়লেন জেটলি। অর্থাৎ, এলাম! পাল্টা প্রণববাবুও মাথা নেড়ে সৌজন্য দেখালেন। এরপর রাজ্যসভা ছাড়লেন বিরোধী দলনেতা। প্রণববাবুর নীরব সম্মতির পরেই যে জেটলি সভা ছাড়লেন তার নীরব সাক্ষী হলাম আমরা, মানে সাংবাদিককুল। আবার তার পরদিনই বাজেটের উপর জবাবি ভাষণে প্রণববাবু যখন জেটলির বক্তব্যের উপর নিশানা করেছেন তখন জেটলির মুখের কোণে স্মিত হাসি।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement