সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের দশম দিন সকাল সকাল জাতির উদ্দেশে ভাষণে কী বলবেন প্রধানমন্ত্রী, সেদিকেই মনোযোগ ছিল রাজনীতিক থেকে আমজনতা, সকলের। নির্দিষ্ট সময়ে তিনি ভিডিও বার্তা দিলেন। বললেন করোনা যুদ্ধে আরও একবার দেশবাসীর ঐক্যবদ্ধ শক্তির প্রমাণ দিতে ‘জনতা কারফিউ’এর মতো আরও এক কর্মসূচি পালনের কথা। সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় আগামী রবিবার রাত নটায় বাড়ির সমস্ত বৈদ্যুতিক আলো নিভিয়ে এবার মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালিয়ে আত্মশক্তিকে জাগ্রত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মোদির ভাষণ শেষ হওয়ার পর তা নিয়ে ভাবার খুব একটা পরিসরও পাওয়া যায়নি। তারই মধ্যে দ্রুত এবং সর্বপ্রথম প্রতিক্রিয়াটি দিলেন তৃণমূলের দাপুটে সাংসদ মহুয়া মৈত্র। টুইটারে কটাক্ষ করে তাঁর বক্তব্য – ‘বাস্তবটা বুঝুন।’
কাঁসর-ঘণ্টা বাজিয়ে, হাততালি দিয়ে করোনা যুদ্ধে একেবারের প্রথম সারিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী ও সাংবাদিকদের মনোবল আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে গত ২২ মার্চ বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী দেশে পালিত হয়েছিল কর্মসূচি। বিকেল ৫টায় গোটা দেশ এক সুরে বেজে উঠে বুঝিয়েছিল, ভারত এক ও অখণ্ড। যে কোনও কঠিন পরিস্থিতিতে এই ঐক্যে চিড় ধরানো যাবে না। এবার আরও একবার শক্তিপ্রমাণের পালা। ৫ এপ্রিল রাতে দেশের সমস্ত ঘরের বৈদ্যুতিক বাতি নিভে যাবে, জ্বলে উঠবে প্রদীপ আর মোমবাতি। আর তাতেই দেশবাসীর ‘মহাশক্তি’র প্রমাণ পাবে গোটা বিশ্ব।
শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর যখন এর মর্ম বোঝার চেষ্টা করছেন দেশবাসী, ঠিক তখনই আক্রমণটা ধেয়ে এল। টুইটারে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর তুড়ন্ত প্রতিক্রিয়া – ‘বাস্তবটা বুঝুন। এই মুহূর্তে নির্মাণ ও অন্যান্য কাজের সঙ্গে যুক্ত দিনমজুরদের আর্থিক সাহায্য নিশ্চিত করুন, লকডাউনের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে। ভুয়ো খবর বন্ধ করার নামে প্রকৃত বাস্তব চাপা দেওয়ার চেষ্টা যেন না হয়।’ এমন কড়া প্রতিক্রিয়া, অথচ টুইটের ছত্রে ছত্রে শ্লেষ আর বিদ্রূপ! কৃষ্ণনগরের সাংসদ যেন আরও একবার বোঝাতে চাইলেন, সংসদ কক্ষে তর্ক-বিতর্কের মতো নেটদুনিয়ায় রণক্ষেত্রেও তিনি সমান টেক্কা দিতে পারেন শাসককে।
Turn out lights & come on balconies?
GET REAL MR. MODI!
Give India fiscal pkg worth 8-10pc of GDP
Ensure immediate wages to construction & other labour during lockdown- laws exist permitting this
Stop gagging real press in name of curbing fake news
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) April 3, 2020
রাজনীতিতে তুলনায় তরুণ অথচ পরিশ্রম আর মেধার জোরে খুব কম সময়ের মধ্যে দ্রুত অনেকটা উঁচুতে পৌঁছে যাওয়া তৃণমূলের এই সাংসদকে সমীহ করতে বাধ্য হন তাবড় বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও। সংসদে প্রথমবার, অথচ তাঁর চোখা চোখা প্রশ্নবাণের সামনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ভাবেন, কী জবাব দেবেন। যে কোনও বিষয়ে যুক্তিনিষ্ঠ আক্রমণ তাঁর সহজাত। এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হল না। করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় জনতা কারফিউ, লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত ঘোষণার পথে যখন হাঁটছে কেন্দ্র আর তা বাস্তবায়নের জন্য দেশবাসীকে একাধিক কর্মসূচি পালনের কথা বলা হচ্ছে, তখন মহুয়া মৈত্র মুখ খুললেন একেবারে শ্রমজীবী মানুষের হয়ে। মোদি-ঘোষিত তথাকথিত কর্মসূচিতে দিন আনি দিন খাই জনতার যে কোনও লাভ হবে না, সাম্প্রতিক টুইটারে তিনি সেকথাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাইলেন। এবং সবচেয়ে দ্রুতগতিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.