সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) মালিকানা টাটার (TATA) হাতে। কিন্তু তার প্রভাবে সংস্থার অস্থায়ী কর্মীদের যাতে চাকরি না যায় সেই আবেদন টাটা সংস্থার কাছে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
সোমবার লখনউ রওনা হওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে সংস্থার অস্থায়ী কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সংস্থার হাত বদলের জেরে তাঁদের চাকরি খোয়ানোর আশঙ্কার কথা মমতাকে বলেন। সে কথা বলেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এয়ার ইন্ডিয়ায় বহু মানুষ কাজ করেন। টাটার কাছে এই সংস্থা বিক্রি করা হয়েছে। টাটাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু তাদের কাছে আমি একটাই অনুরোধ করব, কারও যেন চাকরি না যায়। ভারত সরকার যেন এটা দেখে।”
সংস্থার হাত বদলের সময় অস্থায়ী কর্মীরা চাকরি খোয়ালে তা অত্যন্ত ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াবে। এ কথা জানিয়ে কেন্দ্র সরকারকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অস্থায়ী কর্মী করে আপনারা রেখেছেন। ওদের দোষ কোথায়? চাকরি চলে গেলে খাবে কী?”
একদিন আগেই অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কলকাতায় এসেছিলেন। দ্বিতীয় বিমানবন্দরের জন্য এই মন্ত্রক জমি চেয়েছে রাজ্যের কাছে। রাজ্য তা দিচ্ছে না বলে কলকাতা সফরেই অভিযোগ তোলেন জ্যোতিরাদিত্য। তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পালটা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তোলেন। বলেন, “মন্ত্রীকে বলুন রাজনীতি না করতে। আপনি বলছেন রাজ্য সরকার বিমানবন্দরের ফাইল ছাড়ছে না। জমি দিচ্ছে না! আমি কোথায় তাদের জমি দেব? জোর করে আমি কাউকে তুলে দিতে পারব না। এটা আমাদের নীতি না।”
এক্ষেত্রে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, “কলকাতায় তো একটা বিমানবন্দর রয়েছে। আবার একটা এক হাজার একরের জমি চাই। মানুষের বাড়ি ভেঙে দেব? এটা সম্ভব? তৃতীয় রানওয়ে তো করে দেওয়া হয়েছে। আর এক হাজার একর যেটা চাইছে, তার জন্য তো জমি খুঁজতে হবে। এত সহজ না। আমি সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম করতে দেব না। মানুষের থেকে জোর করে জমি নিতে দেব না।” তাঁর কথায়, “জমি খুঁজে পাওয়া যাক আমিও সেটা চাই। বিমানমন্ত্রীকে বলুন না এক হাজার একর ফাঁকা জমি আমায় খুঁজে দিন।”
এর পরই বাস্তব পরিস্থিতিটা বলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের এই প্রকল্পের জন্য এখনও হাতে ১০-১৫ বছর সময় আছে বলে জানান। বলেন, “এটা নিয়ে তো বড় কিছু হয়নি। জমি খোঁজার চেষ্টা চলছে। ১০-১৫ বছর সময় আছে। তখন জমি দরকার হবে।” রাজ্যে ইতিমধ্যে একাধিক বিমানবন্দর তৈরি রয়েছে। সেগুলো কেন্দ্র কাজে লাগাচ্ছে না বলে পালটা অভিযোগ তুলেছেন। বলেছেন, “বাগডোগরাতে আমরা জমি দিয়েছি। সব তৈরি সেখানে। যেখানে সম্ভব হবে সেখানেই তো হবে। অন্ডালে তো সব তৈরি। কেন এখনও সেখানে আন্তর্জাতিক পরিষেবা শুরু হচ্ছে না? অন্ডাল যে শুধু বাংলার মানুষের সুবিধার জন্য তা তো নয়। বিহার, ঝাড়খণ্ডের মানুষও এটা ব্যবহার করতে পারবেন।” এর সঙ্গেই প্রশ্ন তোলেন, “কোচবিহার, মালদহ, বালুরঘাটের বিমানবন্দর তৈরি। কেন সেখানে কেন্দ্র আঞ্চলিক পরিষেবা শুরু করছে না?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.