সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ। মহামারির আকার নিয়ে গণপিটুনি। জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে হামলা হচ্ছে দলিত, মুসলিমদের উপর। আর এতেই বেজায় চটেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে এক খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা। দেশের বিদ্বজ্জনদের সেই তালিকায় নাম রয়েছে মোট ৪০০ জনের। সেই তালিকা থেকে বাদ যাননি সাহিত্য, সিনেমা, সংগীত জগতের একাধিক ব্যক্তিত্ব থেকে বৈজ্ঞানিক, ইতিহাসবিদ। দেশের এই অস্থির পরিস্থিতিতে প্রত্যেকের কপালেই পড়েছে ভাঁজ। জয় শ্রীরাম থেকে গণপিটুনি, যাবতীয় অসহিষ্ণুতামূলক বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো বিদ্বজ্জনদের সেই চিঠিতে।
“সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। জয় শ্রীরাম বলে মারধর চলছে। আজ যদি একজন মুসলমানকে জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করা হয়, তা কি সমীচীন হবে?…” -অপর্ণা সেন
দেশে ধর্মের দোহাই দিয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষদের মধ্যে চলছে হানাহানি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানবজাতি আজ সংকটাপন্ন। কথায় বলে, শিল্প-সংস্কৃতি-সৃজনশৈলীর কোনও জাত হয় না। তা জাত-ধর্মের উর্ধ্বে। আর সেই বিষয়টিকে পাথেয় করেই আজ দেশের ভিন্ন ময়দানের বিদ্বজ্জনরা জড়ো হয়েছেন। সমস্বরে মুখ খুলেছেন জয় শ্রীরাম থেকে গণপিটুনি, যাবতীয় অসহিষ্ণুতামূলক বিষয় নিয়ে। বারবার তাঁরা প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে কেন দিনের পর দিন এই অসহিষ্ণুতা চলতে থাকবে? চিঠিতে সই করেছেন খ্যাতনামা চিত্রপরিচালক অপর্ণা সেন, মণিরত্নম, শ্যাম বেনেগাল, কেতন মেটা, অনুরাগ কাশ্যপ, আদুর গোপাল কৃষ্ণন, কৌশিক সেন, সুমন ঘোষ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, ঋদ্ধি সেন, সংগীত শিল্পী শুভা মুদগল, অনুপম রায়, রূপম ইসলামের মতো ব্যক্তিত্ব।
[আরও পড়ুন: অভিনয়ের পাশাপাশি এবার প্রযোজক হিসেবে নাম লেখালেন বিদ্যা বালন]
“অসহিষ্ণুতা হল একপ্রকার মধ্যযুগীয় বর্বরতা”, ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে এই কথা উল্লেখ করেছেন বিশিষ্টজনরা। পাশাপাশি, দলিত ও সংখ্যালঘুদের উপর বেড়ে চলা হামলার বিরুদ্ধেও সওয়াল করেছেন তাঁরা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় রোজ কোথাও না কোথায় গণপিটুনিতে নিহত হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। স্বজনহারা হচ্ছে কত পরিবার। শুধু সংখ্যালঘুই নয়, হামলা হচ্ছে জয় শ্রীরাম না বলা মানুষগুলির উপরও। এই প্রসঙ্গে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দাবি করেছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কাহিনি নিয়ে তৈরি হচ্ছে আমিরের নয়া ছবি!]
এপ্রসঙ্গে পরিচালক অপর্ণা সেন জানিয়েছেন, “সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। জয় শ্রীরাম বলে মারধর চলছে। আজ যদি একজন মুসলমানকে জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করা হয়, তা কি সমীচীন হবে? প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। দেশজুড়ে প্রতিবাদ হওয়া উচিত।” কেন এই উদ্যোগ নিলেন বিদ্বজ্জনরা? সেপ্রসঙ্গে অভিনেতা তথা পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সংবিধান আমাদের যেগুলো বলে সেগুলো কোথাও গিয়ে লঙ্ঘিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ভারতের গণতান্ত্রিক চেহারাটা যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে, সেই জন্যই চিঠি দিয়েছি আমরা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.