সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুম্বইয়ের কাছে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ‘এলিফ্যান্টা কেভ’-এ অবশেষে পৌঁছল বিদ্যুৎ। তাও আবার স্বাধীনতার প্রায় ৭০ বছর পর। সমুদ্রের নিচে প্রায় ৭.৫ কিলোমিটার লম্বা তারের সাহায্যে বিদ্যুৎ পৌঁছল ঘরাপুরি আইল-এ। ভুললে চলবে না ১৯৮৭ থেকে এই এলাকা কিন্তু ইউনেস্কোর হেরিটেজ সাইট। প্রতি বছর এখানে কমবেশি ২০ লক্ষ পর্যটক আসেন। এই দ্বীপে রয়েছে সাতটি ছোট-বড় গুহা যেগুলি পাথর কেটে বানানো হয়েছিল আনুমানিক ৫০০-৬০০ খ্রিস্টাব্দে।
এই ঘটনাকে ঐতিহাসিক বলে আখ্যা দিচ্ছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে। তাঁর বক্তব্য, ‘এই প্রথম আরবসাগরের নিচে এত লম্বা তার ব্যবহার করে কোথাও বিদ্যুতের সংযোগ আনা হল।’ এর ফলে এই জনপ্রিয় পর্যটনস্থলে আরও বেশি দর্শক আসবেন ও অন্যদেরও আসতে উৎসাহিত করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। এই অভিনব উদ্যোগের ফলে আশেপাশের তিনটি গ্রাম রাজ বন্দর, মোরা বন্দর ও শেত বন্দরও উপকৃত হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এতদিন এই গ্রামের বাসিন্দারা সারাদিনে মাত্র তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেতেন, তাও অনিয়মিত এবং বেশি খরচে। এবার গ্রামেই বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় বাসিন্দাদের জীবনযাপনের মানও উন্নত হবে বলে আশা করছে সরকার। ফেরিতে চেপে পৌঁছে যাওয়া যায় আরবসাগরের ঢেউ আছড়ে পড়া এলিফ্যান্টা গুহায়। প্রায় আড়াই কিলোমিটার ব্যাপ্ত দুটি পাহাড় নিয়ে ৫০০ ফুট উচ্চতার এলিফ্যান্টা কেভ অনেকটা হাতির মাথার মতো দেখতে।
Electricity connection made accessible to Elephanta Island after 70 years of Independence; a 7.5 km long undersea cable brought electricity to three villages- Raj Bander, Mora Bander & Shet Bander #Maharashtra pic.twitter.com/95SfooC7PD
— ANI (@ANI) February 23, 2018
দেবাদিদেব মহাদেবকে উদ্দিষ্ট করে পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শতকে মোট সাতটি গুহা নির্মিত হয়েছিল। পুরো পাহাড়টাই ব্যাসল্ট পাথরে নির্মিত। দুটি শাখা আছে এলিফ্যান্টা গুহার। প্রথম ৫টি হল হিন্দু গুহা এবং বাকি দুটি বৌদ্ধ গুহা, যাকে বৌদ্ধ মতে ‘স্তূপ’ বলা হয়। আরবসাগরের দিকে মুখ ফেরানো প্রথম গুহাটি প্রায় ১.৬ কিমি প্রশস্ত। সারি সারি থাম ও ছড়ানো দালান। দেওয়ালে নানা মূর্তি। মূল মুম্বই থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইউনেস্কোর এই হেরিটেজ সাইটে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। সময় লেগেছে ১৫ মাসেরও বেশি। মহারাষ্ট্র বিদ্যুৎ দপ্তরের আঞ্চলিক কর্তা সতীশ কারাপে বলছেন, ‘ভারতে এর আগে এত বড় বিদ্যুতের তার কখনও সমুদ্রের নিচে পাতা হয়নি। তিন মাস সময় লেগেছে শুধু তার পাততেই। আশেপাশের তিনটি গ্রামে বসানো হয়েছে ট্রান্সফরমার। বসেছে এলইডি লাগানো ১৩ মিটার লম্বা ৬টি স্ট্রিট লাইট।’২০০টি বাড়িতে বসেছে নতুন মিটার।’ গত তিনদিনের পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষণ সফল হওয়ায় বেজায় খুশি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্তা ও ইঞ্জিনিয়াররাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.