ছবি: প্রতীকী
শুভঙ্কর বসু: ভোটার যাচাইকরণ কর্মসূচিতে আধার কিংবা প্যান কার্ডের পাশাপাশি প্রমাণ্য নথি হিসাবে স্থান পেয়েছে ইলেকট্রিক বিল। ভোটারের ঠিকানা যাচাইয়ে শুধু ইলেকট্রিক বিল হলেই চলবে। কিন্তু ‘ইলেকট্রিক বিল’ কি জমি বা বাড়ির মালিকানা প্রমাণে কোনও বৈধ ‘নথি’ হতে পারে? জাতীয় নাগরিকপঞ্জি কিংবা এনআরসি বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) হাওয়ায় মানুষ যেখানে নাগরিকত্বের প্রমাণ জোগাড়ে হন্যে হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে, সেখানে ইলেকট্রিক বিলের বৈধতা কোথায়? সম্প্রতি একটি মামলায় এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।
আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ইলেকট্রিক বিল জমি-বাড়ির মালিকানা কিংবা স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণ হিসাবে বৈধ নথি হতে পারে না। ইলেকট্রিক বিলে গ্রাহকের জায়গার নাম থাকলেই প্রমাণ হয় না যে, কোনও ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট কোনও জায়গার স্থায়ী বাসিন্দা। কিন্তু কোন মামলার প্রেক্ষিতে হাই কোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মন্থার এমন নির্দেশ?
দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা আমিনা বিবির (নাম পরিবর্তিত) অভিযোগ, তাঁর বাড়ির একটি অংশ দখল করে রেখেছে জনৈক রহমত আলি (নাম পরিবর্তিত) নামে এক ব্যক্তি ও তার দলবল। বেশ কিছু নথি জাল করে সিইএসসি’র কাছ থেকে ওই অংশের ইলেকট্রিক কানেকশনও পেয়ে গিয়েছে সে। আর এখন সেই ‘ইলেকট্রিক বিল’-এর জোরে রহমত জমির মালিকানা চেয়ে আদালতে মামলা ঠুকেছে। আমিনার মূল অভিযোগ সিইএসসির বিরুদ্ধে। মামলায় আমিনা দাবি করেছেন, সম্পত্তির মালিকানা তার নামে রয়েছে। তা যাচাই না করে কীভাবে ওই অংশে ইলেকট্রিক কানেকশন দিল সিইএসসি? অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত আগস্টে সিইএসসি কর্তৃপক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
সিইএসসি রিপোর্টে জানায়, সম্পত্তির ওই অংশের মালিকানা সংক্রান্ত কোনও নথি রহমতের কাছে মেলেনি। কিন্তু ওই অংশ তার দখলদারির মধ্যে রয়েছে। সিইএসসি’র কাছ থেকে ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরই রহমতের দখলে থাকা অংশের বিদ্যুৎ সংযোগ অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজশেখর মন্থা। বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শুধুমাত্র ইলেকট্রিক বিল কোনও সম্পত্তির মালিকানা সংক্রান্ত বৈধ নথি হতে পারে না। এমনকী, কোনও ঠিকানার স্থায়ী বাসিন্দা প্রমাণেও ইলেকট্রিক বিল গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.