ফাইল ছবি।
স্টাফ রিপোর্টার: বিভিন্ন সময়ে যে দাবি তুলে আসছিল বিভিন্ন বিরোধী দল, নির্বাচনী বন্ডের ইউনিক নম্বর সম্বলিত তথ্য প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে কার্যত তাতেই শিলমোহর পড়ল। নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা গেল কুইক সাপ্লাই চেন নামে একটি সংস্থা, যার দপ্তর মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স গোষ্ঠীর ক্যাম্পাসেই, সেই সংস্থা ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ৪১০ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে। এর ৯১ শতাংশেরও বেশি, অর্থাৎ ৩৭৫ কোটি টাকা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির কোষাগারে।
বিজেপিকে দেওয়া অনুদানের তালিকায় এক নম্বরে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং। তারা দিয়েছে ৫৮৪ কোটি। যে সব বড় কর্পোরেট বিজেপিকে অনুদান দিয়েছে তাঁদের তালিকায় তিন নম্বরে কেভেন্টার্স। ওই সংস্থা গেরুয়া শিবিরকে চাঁদা হিসাবে দিয়েছেন ৩৫২ কোটি। আদিত্য বিড়লা গ্রুপ বিজেপিকে দিয়েছে ২৮৫ কোটি টাকা। বেদান্তের ২৩০ কোটিও গেছে বিজেপির কোষাগারে। বিরোধীদের বরাবরই অভিযোগ ছিল দেশের দুই বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা আম্বানি ও আদানিদের কেনা বন্ডের সিংহভাগই পেয়েছে বিজেপি। তথ্য প্রকাশ্যে আসতে সেই অভিযোগই সত্য হল।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় ফিসফাস। কখন স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (SBI) কমিশনকে ইউনিক নম্বর-সহ নির্বাচনী বন্ডের তথ্য জমা দেবে? কখন কমিশন সেই তথ্য নিজেদের ওয়েবসাইটে আপলোড করবে? প্রথম প্রশ্নের উত্তর এসে যায় দুপুরের মধ্যেই। সাড়ে তিনটে নাগাদ সুপ্রিম কোর্টকে (Supreme Court) হলফনামা জমা দিয়ে এসবিআইয়ের চেয়ারম্যান দীনেশ কুমার খারা জানান, তাঁরা আদালতের ১৮ মার্চের নির্দেশ মেনে কমিশনকে ইউনিক নম্বর-সহ তথ্য জমা দিয়ে দিয়েছেন। এর পরই বাড়ে ঔৎসুক্য। কখন সেই তথ্য প্রকাশ করবে কমিশন। কারণ, সোমবার যে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট, সেই অনুযায়ী এদিন বিকেল পাঁচটার মধ্যে এসবিআই-এর থেকে পাওয়া তথ্য আপলোড করতে হবে কমিশনকে। অবশেষে সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটে। ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড করে কমিশন।
এর পর থেকেই শুরু হয়ে যায় খোঁজ। কোন রাজনৈতিক দল কোন ইউনিক নম্বরের বন্ড কিনেছে? কোন দল সেই বন্ড ভাঙিয়ে কত টাকা পেয়েছে? প্রাথমিকভাবে দেখা যায় কুইক সাপ্লাই চেন প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক সংস্থা এক বছরের মধ্যে প্রায় ৩৭৫ কোটি টাকা দিয়েছে বিজেপিকে। এই সংস্থার ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার রয়েছে রিলায়েন্স গোষ্ঠীর দখলে। যার পর থেকেই নতুন করে সরব হতে শুরু করে বিরোধীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.