সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ অনুগামী ইকবাল মেমন মির্চির সঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল প্যাটেলের জমি কেনাবেচা ও সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক মদত দেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ধনকুবের ইকবাল মেমন অসুস্থ হয়ে ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট লন্ডনে মারা যায়। সে দাউদ ইব্রাহিমের খুব কাছের এবং ডান হাত ছিল।
সূত্রের খবর, মুম্বইয়ের ওরলিতে রয়েছে নেহরু প্ল্যানেটোরিয়াম। তার কাছেই ছিল কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লট। অভিযোগ, প্লটটি বহু বছর ধরে জবরদখল করেছিল ইকবাল মির্চি। পরে সে মালিকানা পায়। সে ২০০৫ সালে এটি চড়া দামে বিক্রি করেছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী প্রফুল প্যাটেলের নাম জড়িয়ে থাকা মিলেনিয়াম ডেভেলপার্স প্রাইভেট লিমিটেডকে। সেই জমিতে পরবর্তীকালে ১৫ তলার সিজে হাউস নামে একটি বিলাসবহুল আবাসন গড়ে তোলে মিলেনিয়াম সংস্থা। ওই আবাসনের ফ্ল্যাটগুলিও চড়া দামে বিক্রি করা হয় বিভিন্ন সংস্থাকে। এই মিলেনিয়াম সংস্থাটি আসলে প্রফুল প্যাটেলের পরিবারের দ্বারা পরিচালিত সংস্থা। আদতে পরিবারের সদস্যদের সামনে রেখে মিলেনিয়ামের সব কিছুই লেনদেন আড়ালে চালান প্রফুল প্যাটেল।
ইডি জানিয়েছে, এই জমি ও ফ্ল্যাট কেনাবেচা সংক্রান্ত নানা আর্থিক অনিয়মের তদন্তে নেমে তাদের হাতে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সূত্র পাওয়া গিয়েছে। মুম্বইয়ে ১১টি জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। সমাজের নানা স্তরের ১৮ জন ব্যক্তির বয়ান রেকর্ড করা হয়। প্রচুর নথি, কাগজ, ইমেল, ডিজিটাল সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে ইডি। সেখানে দেখা গিয়েছে প্রফুল প্যাটেলের পরিবারের নামাঙ্কিত মিলেনিয়াম ডেভেলপার্স অবৈধ উপায়ে জমি কেনাবেচার লেনদেন করেছে। প্রফুল প্যাটেল সম্ভবত সবই জানতেন। ইডি সূত্রে খবর, এই গোটা অবৈধ লেনদেনে জড়িত থাকায় ব্রিটিশ নাগরিক হারুন আলিম ইউসুফ ও মুম্বইয়ের স্থানীয় বিল্ডার রঞ্জিত সিং বিন্দ্রাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জেরা করে পাওয়া সূত্র ধরেই প্রফুল প্যাটেলের পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে ইডি। কারণ কালো টাকায় প্লটটি কেনাবেচার লেনদেন হয়েছে। প্লটটি বিক্রি করে সেই টাকায় দুবাইয়ে পাঁচতারা হোটেল কিনেছিল ইকবাল মির্চি।
মিলেনিয়ামের অফিসে পাওয়া নথি এবং ইকবাল মেমনের স্ত্রী হাজারা মেমনের কাছে পাওয়া নথির অনেক মিল আছে। জানা গিয়েছে, পুরসভার অনুমতি না নিয়েই ইচ্ছেমতো জমির মানচিত্র ও নির্মীয়মাণ ভবনের নকশা বদল করা হয়েছিল বিপুল মুনাফার উদ্দেশ্যে। শুধু তাই নয়, চুক্তি অনুসারে সিজে হাউসের দুটি তলা মেমনের পরিবারকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোনও নথি নেই। প্যাটেলের পরিবারের সদস্যদের সবাইকে জেরা করেও সদুত্তর মেলেনি। মুম্বই বিস্ফোরণে জড়িত, মাদক ব্যবসার কিংপিন পলাতক অপরাধী ইকবাল মির্চির পরিবারের সঙ্গে গোটা লেনদেনটি হয়েছিল ২০০৬-২০০৭ সালের মধ্যে। এই ধরনের ডিল করার ক্ষেত্রে পুলিশ ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাও মানেনি প্রফুল প্যাটেলের ওই সংস্থা। সূত্রের খবর, গোটা অবৈধ লেনদেনে আড়ালে প্রভাব খাটিয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও ভারতীয় ফুটবল সংস্থার প্রধান প্রফুল প্যাটেল।
[আরও পড়ুন: প্রচুর টাকা নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতেন ‘নির্ভয়া’র বন্ধু! প্রমাণিত স্টিং অপারেশনে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.