সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। সেই মামলার তদন্তে নেমে বুধবার হিমাচলপ্রদেশে কংগ্রেস বিধায়ক-সহ হাত শিবিরের একাধিক নেতার বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে নামল ইডি। জানা গিয়েছে, হিমাচলপ্রদেশের পাশাপাশি পাঞ্জাব ও চণ্ডীগড়ের অন্তত ১৯টি জায়গায় চলছে তল্লাশি অভিযান। ৪০টি গাড়িতে করে প্রায় ১৫০ জন আধিকারিক হিমাচলের কঙ্গড়া, সিমলা, উনা, মান্ডি ও কুল্লুর নানান জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথমবার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তোলে ভিজিল্যান্স বিভাগ। সেই মতো দায়ের হয় এফআইআর। অভিযোগ ওঠে, ভুয়ো কার্ড বানানোর পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসার মিথ্যে তথ্য দিয়ে বিপুল টাকার কারচুপি করেছে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে বুধবার কংগ্রেস বিধায়ক রঘুবীর সিং বালি, কংগ্রেস নেতা তথা চিকিৎসক রাজেশ শর্মা-সহ একাধিক ব্যক্তি বাড়ি ও নার্সিংহোমে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত রাজেশ শর্মা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর ঘনিষ্ঠ। বুধবার সকালে এক মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাজেশ। সেখান থেকেই তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় ইডি। কোনও রকম অশান্তির আশঙ্কায় রঘুবীর ও রাজেশের বাড়ি ও হাসপাতালের বাইরে বিপুল সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও এই রাজ্যের আরও একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে চলছে তল্লাশি।
উল্লেখ্য, দেশের গরিবদের জন্য আনা স্বাস্থ্য প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ গত বছর প্রকাশ্যে এসেছিল ক্যাগ (CAG) রিপোর্টে। যেখানে দাবি করা হয়, প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ ভুয়ো অ্যাকাউন্ট নথিভুক্ত হয়ে রয়েছে। স্রেফ 9999999999 এই নম্বরেই নথিভুক্ত হয় ৭ লক্ষ ৪৯ হাজার ৮২০টি অ্যাকাউন্ট। 8888888888-এই নম্বরে নথিভুক্ত হয় প্রায় ১ লক্ষ ৩৯ হাজার অ্যাকাউন্ট। প্রায় ৯৬ হাজার অ্যাকাউন্ট নথিভুক্ত হয় 9000000000 নম্বরে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ অ্যাকাউন্ট নথিভুক্ত হয়ে রয়েছে ভুয়ো নম্বরে। এই অ্যাকাউন্টগুলির আদৌ অস্তিত্ব আছে কিনা, সেটাই এখন প্রশ্নের মুখে। এই অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে কেউ টাকা পেয়ে থাকলে সেই টাকা কোথায় গেল সে প্রশ্নও উঠে।
একাধিক রাজ্যে দেখা যায়, চিকিৎসা চলাকালীন কোনও রোগীর মৃত্যু হওয়ার পরও আয়ুষ্মান ভারত (Ayushman Bharat) প্রকল্পের আওতায় তাঁর চিকিৎসার খরচ বাবদ অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। এই সংখ্যাটাও প্রায় ৮০ হাজার। একই ব্যক্তি একই সঙ্গে একাধিক হাসপাতালে ভরতি থাকার দাবি করে এই প্রকল্পের আওতায় টাকা তুলেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। CAG রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়ুষ্মান ভারতে নথিভুক্ত প্রায় ৪৩ হাজার পরিবার এমন রয়েছে যাতে সদস্য সংখ্যা ১৫ জন থেকে শুরু করে ২০১ জন পর্যন্ত। যা কিনা অসম্ভব। এক্ষেত্রেও রেজিস্ট্রেশনে গড়বড় হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। প্রকল্প নইয়ে বিতর্কের মাঝেই এবার দেশের একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করল ইডি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.