সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হোস্টেল আবাসিক নাবালিকাদের মাদক মেশানো ফল ও চকলেট খাওয়ানো হত। এর পর বেহুঁশ অবস্থায় তাদের যৌন হেনস্থা করতেন কর্ণাটকের (Karnataka) লিঙ্গায়েত ধর্মগুরু (Lingayat Monk) শিবমূর্তি মুরুঘা শরণারু (Shivamurthy Murugha Sharanaru)। ৬৯৪ পাতার চার্জশিটে এমনটাই জানাল পুলিশ। এদিন পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, মূলত নির্যাতিতা নাবালিকদের বয়ানের ভিত্তিতে চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে।
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ১৫ ও ১৬ বছরের দুই কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত ধর্মগুরু শিবমূর্তি মুরুঘা শরণারু। গত ২৬ অগস্ট মঠ থেকে এক নাবালিকা পালিয়ে গিয়ে মাইসুরুর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দ্বারস্থ হয়। এর পরই মাইসুরু থানায় লিঙ্গায়েত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। তাঁকে প্রাথমিক ভাবে আটক করার পর ছেড়ে দেওয়া হলে বিক্ষোভে উত্তাল হয় মাইসুরু (Measure) শহর। এর পর গত সেপ্টেম্বরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। তার আগে ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করেছিল কর্ণাটক পুলিশ। তারপরই গভীর রাতে গ্রেপ্তার হন শিবমূর্তি মুরুগা শরনারু।
এবার পুলিশের চার্জশিটে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। আবাসিক নাবালিকাদের ধর্মগুরুর বেডরুমে যেতে বাধ্য করা হত। এর পর অভিযুক্ত তাদের মাদক মেশানো চকলেট ও ফল খেতে দিতেন। তা খাওয়ার পরে জ্ঞান হারাত নাবালিকরা। পরদিন সকালে হুঁশ ফিরলে নেশাগ্রস্ত অনুভব করতেন নাবালিকারা। গোপনাঙ্গ-সহ গোটা শরীরে ব্যথা বোধ করতেন। নির্যাতিতারা জানিয়েছেন, মঠ প্রধানের ঘরে যেতে না চাইলে তাদের কঠিন শাস্তি দিতেন ওয়ার্ডেন। এমনকী নেশাগ্রস্ত করে লিঙ্গায়েত ধর্মগুরুর বাথরুম ও অফিসেও পাঠানো হত তাদের। পুলিশের চার্জশিটে আরও এক আবাসিক নাবালিকার রহস্যজনক মৃত্যুর প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। মঠ ছাড়ার পরদিন কর্নাটক-অন্ধ্রপ্রদেশ সীমান্তে রেল লাইনের ধার থেকে ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়। তার সঙ্গেও যৌন হেনস্থা চলছিল কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এরাজ্যের মতুয়াদের মতোই কর্ণাটকের লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় বড় ভোটব্যাংক। গত আগস্ট মাসে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কর্ণাটকে গিয়ে লিঙ্গায়েত ধর্মুগুরুদের সঙ্গে দেখা করেন। ওই ধর্মগুরুদের অন্যতম অভিযুক্ত শিবমূর্তি মুরুগা শরনারু। এমন একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠাতেই হয়তো কোনও রাজনৈতিক দল সোচ্চার হচ্ছে না। উল্লেখ্য, রাজ্যের বিজেপি নেতারাও ভোটের মুখে বাধ্যতামূলক আশীর্বাদ নিতে ছোটেন চিত্রদুর্গের এই মঠে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.