সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচনের ইস্যু কি হওয়া উচিত? নিজেদের নীতি অনুযায়ী ঠিক করে রাজনৈতিক দলগুলি। সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশের ক্ষেত্রে কখনও ইস্যু হিসেবে উঠে আসে সমাজের জ্বলন্ত সমস্যা, কিংবা আগামী দিনের পথদিশা। কিন্তু, ভারতের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই এর ব্যতিক্রম হয়। দেখা যায়, জনসাধারণের সমস্যার থেকে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার হচ্ছে মূলত ধর্ম এবং জাতপাতকেন্দ্রীক। এতে গৌণ হয়ে যায় সাধারণ মানুষের সমস্যা। প্রাধান্য পায় ধর্মীয় এজেন্ডা। আর এই এজেন্ডার প্রচারের মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় ধর্মীয় স্থান এবং ধর্মগুরুদের। এবার এই অপচেষ্টাতে ইতি টানতে উদ্যোগ নিচ্ছে কমিশন।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলি এবং ধর্মীয় নেতারা ‘অপপ্রচার’-এর জন্য ধর্মীয় স্থান ব্যবহার করতে পারবে না বা এমন কোনও কাজ করতে পারবে না যাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উসকানি দেওয়া হয়। ভোটের জন্য জাতি হিংসা বা ধর্মীয় হিংসায় ইন্ধন জোগালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আসলে, নির্বাচন কমিশনে একটি আবেদন করা হয়েছিল বিজেপির তরফে। গেরুয়া শিবিরের দাবি ছিল, ভোটে ফায়দা তোলার জন্য মাদ্রাসা এবং মসজিদগুলিকে ব্যবহার করছে বিরোধীরা। কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, ধর্মের ভিত্তিতে ভোটারদের বিভাজনের সমস্তরকম অপচেষ্টা কড়া হাতে দমন করা হবে। এমনিতেও নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসারে, “ভোটের প্রচারের সময় জাতি এবং ধর্মের উল্লেখ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।” এবার ধর্মস্থানগুলিতেও রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করছে কমিশন। উল্লেখ্য, এর আগে কেরলের জন্য একটি বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। যাতে বলা ছিল, কোনও রাজনৈতিক দলই সবরীমালা ইস্যুকে হাতিয়ার করে ভোট চাইতে পারবে না।
উল্লেখ্য, ভারতীয় রাজনীতিতে ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়ার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলও নিজেদের প্রার্থীতালিকা ঘোষণার সময় বিশেষভাবে জাত ধর্মের সমীকরণ মাথায় রাখে। তাছাড়া ভোট এলেই নেতাদের মনে পড়ে মন্দির-মসজিদ দর্শনের কথা। তোষণ-তুষ্টিকরণের রাজনীতির জেরে চাপা পড়ে যায় সাধারণ মানুষের সমস্যা। কমিশনের এই উদ্যোগে আদৌ এর কোনও পরিবর্তন হয় কিনা সেটাই এখন দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.