সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত মেধাবী ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ বাবদ দু’লক্ষ টাকার আর্থিক অনুদান ফেরালেন নির্যাতিতার মা৷ সরকারি দয়াদাক্ষিণ্য ফিরিয়ে এদিন সংবাদমাধ্যমে নির্যাতিতার মা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘টাকা দিয়ে কী হবে? যদি সাহায্য দিতেই হয়, তাহলে দোষীদের শাস্তি দিয়ে দেখান৷’’
[‘আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেই শুরু হবে রাম মন্দির তৈরির কাজ’]
গত বুধবার গণধর্ষণের শিকার হন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত মেধাবী ছাত্রী৷ নির্যাতিতার বাড়ি মহেন্দ্রপুর জেলারই রেওয়ারি গ্রামে৷ রাষ্ট্রপতি পুরস্কারই পাওয়ার পাশাপাশি সিবিএসই-তে রাজ্যে প্রথম হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কারও পান৷ অভিযোগ, টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে অপহরণ করে কয়েকজন ব্যক্তি৷ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় অনেক দূরে একটা নির্জন এলাকায়৷ সেখানেই তাঁকে গণধর্ষণ করে ১২ জন৷ এরপর তাঁকে কানিনা বাসস্ট্যান্ডের কাছে ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা৷ অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা৷ তাঁরাই উদ্ধার করে ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে ভরতি করেন৷ খবর দেওয়া হয় তাঁর পরিবারকে৷ বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রী৷
কৃষক পরিবারে একমাত্র মেয়ে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটান নির্যাতিতার মা৷ মেয়ের সম্মান নষ্ট হওয়ার দায় সরাসরি নরেন্দ্র মোদির ঘাড়ে চাপান নির্যাতিতার মা৷ মোদির স্বপ্নের ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের বাস্তবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন৷ বলেন, ‘‘কী করছেন মোদি? দেশের বেটিদের এটাই কি ভবিষ্যৎ৷’’ নির্যাতিতা মায়ের এই মন্তব্য তোলপাড় ফেলে দেয় জাতীয় রাজনীতির ময়দান৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে উঠেপড়ে লাগে স্থানীয় প্রশাসন৷
[জ্বালানির দাম বাড়লে আমার কী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক তুঙ্গে]
ঘটনার তদন্তে নেমে ডিজিপি বিএস সান্ধু জানিয়েছেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বাকি দু’জনকেও গ্রেপ্তার করার তোড়জোড় চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ পুলিশ এখনও পর্যন্ত তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই অভিযুক্তদের মধ্যেই একজন ভারতীয় সেনার জওয়ান৷ বর্তমানে তার পোস্টিং রাজস্থানে। এই অভিযুক্তের খবর যে দিতে পারবে, তার জন্য ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে হরিয়ানা পুলিশ। জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফেও একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে গঠিত হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)৷ কিন্তু, ঘটনার পাঁচদিন পরও তদন্তে গতি না আসায় চূড়ান্ত ক্ষোভপ্রকাশ করেন নির্যাতিতার মা৷ সরকারের দেওয়া দু’লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য ফিরিয়ে দিয়ে মন্তব্য, ‘‘সরকারের কাছে একটি মেয়ের সম্মানের মূল্য মাত্র দু’লক্ষ টাকা? টাকার বিনিময়ে যদি মহিলাদের সম্মান কেনা যেত, তাহলে ভারতীয় নারীদের ঐতিহ্য বলে আর কিছু থাকত না৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.