সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিএএ বিরোধিতায় উত্তপ্ত গোটা দেশ। কাগজ না দেখানোর স্লোগানও অনেকদিন আগে থেকেই উঠে এসেছিল বিরোধীদের কন্ঠে। এবার সেই সুরে সুর মিলিয়ে নিজেই ডিটেনশন ক্যাম্পে যাওয়ার কথা ঘোষণা করলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি জানান, ‘আমার বাবা-মায়ের জন্মতারিখ আমার জানা নেই। তাই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে কোনও বাধা নেই।’
শুক্রবার রাজস্থানের জয়পুরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে অবস্থান প্রতিবাদের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রকে নয়া নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করার আবেদন জানান রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখতে শুক্রবার এই আইন প্রত্যাহার করার আবেদন জানান রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লির শাহিনবাগের ধাঁচে গত কয়েকদিন ধরেই রাজস্থানেও শুরু হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে অবস্থান প্রতিবাদ। শুক্রবার অশোক গেহলট হঠাৎই সেই আন্দোলন মঞ্চে হাজির হন ও এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারকে পুনরায় এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিবেচনা করা উচিত, কারণ এই আইন ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী। একমাত্র এই আইন প্রত্যাহার করলে তবেই পুনরায় শান্তি ও ঐক্য স্থাপন করা সম্ভব হবে।
অশোক গেহলট আন্দোলনকারীদের উজ্জীবিত করতে বলেন, রাজ্য সরকার, কংগ্রেস সমর্থকরা আন্দোলনকারীদের পাশে আছে। প্রয়োজনে এই আইনের বিরোধিতা করে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতেও রাজি তিনি। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী জানান, জাতীয় নাগরিকপঞ্জিতেও ব্যক্তির বাবা-মায়ের জন্মতারিখ জানতে চাওয়া হয়েছে। নিজের বাবা-মায়ের জন্মস্থান না জানায় রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকার ও ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।
অশোক গেহলট জানান, সরকার দেশের উন্নয়েনর স্বার্থে আইন প্রণয়ন করতেই পারেন। তবে সেই আইনের সঙ্গে জণগনের স্বার্থ ও আবেগকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, দিল্লির শাহিনবাগের ধাঁচে দেশের সর্বত্রই এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আগুন জ্বলে উঠেছে। রাজস্থানের মতো অনেক রাজ্য সরকারই এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। তবে এই প্রতিবাদের আগুনে ধামা চাপা দিতে গত বছরের শেষে ডিসেম্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন দেশব্যাপী এনআরসি কার্যকর করার কথা এখনও তিনি ভাবেননি। পাশাপাশি তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী NRC কার্যকর করতে সংসদে এখনও পর্যন্ত কোনও উল্লেখ করেননি।
এই জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকে জনসমক্ষে তুলে ধরতে অনেক ব্যাখ্যাও দেন তিনি। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের রুখতেই এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বাস্তবায়ন করা হয়। তবে এই এনআরসির ফলে গত বছর অসমে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ে। তাদের মধ্যে অনেকেরই এখন বর্তমান ঠিকানা ডিটেনশন ক্যাম্প। তবে এনআরসি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের পার্থক্য থাকায় ধন্দে পড়েছে দেশবাসী। এখন এনআরসি ও সিএএ নিয়ে বিরোধিতার পাশাপাশি নিজেদের গড় সামলাতে গেরুয়া শিবির কোন পন্থা অবলম্বন করবেন সেই দিকে তাকিয়ে বিরোধীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.