সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃষ্টি কবে যে মুষলধারায় নামবে, তার কোনও ঠিক-ঠিকানা নেই। আসব আসব করেও সে আর আসে না। চাতকের দশা বঙ্গের। হা হুতাশ করেও লাভ হচ্ছে না। হয়তো আর দিন কয়েকের মধ্যে ব্যাঙের বিয়ে দেখা যাবে বাংলায়। কিন্তু তার আগেই সেই রাস্তায় চলতে শুরু করে দিল কর্ণাটক।
[ উগ্র হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে সওয়ালকারীদের নিরাপত্তা জোরদার সিটের ]
কর্ণাটকের বহু পুরোনো এক প্রথা প্রচলিত রয়েছে হুবলিতে। বাংলার ব্যাঙের বিয়ের মতোই সেখানেও বৃষ্টিকে নিমন্ত্রণ পাঠানোর প্রথা এটি। বাংলায় যেমন দুটি ব্যাঙের মধ্যে বিয়ে দেওয়া হয়, তেমনই এই সম্প্রদায়ের লোকেরা বিয়ে দেয় দুটি পুতুলের মধ্যে। সাত বচনে বেঁধে দুটি পুতুলের বিয়ে দেন কর্ণাটকের এই গ্রামের লোকেরা। গোটা অনুষ্ঠানটাই হয় সনাতন প্রথায়। এবার সেই প্রথা অনুসরণ করে দুই পুতুলের বিয়ে দিল হুবলি সম্প্রদায়। তাদের বিশ্বাস এই প্রথায় তুষ্ট হন বরুণ দেব। ফলে বৃষ্টি নামায় অঝোরে। দুই পুতুলের বিয়ে উপলক্ষে পাত পেড়ে খাওয়ানোর বন্দোবস্তও ছিল। বেশ কিছু অতিথিদের আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল।
[ প্রকাশ্যে গরু জবাই করার হুমকি মৌলবির, নীরব শ্রোতা কংগ্রেস মন্ত্রী ]
তবে শুধু বরুণ দেবকে নয়। ভাগ্যদেবীকে সুপ্রসন্ন করতেও এই বিয়ের মহান ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা। এই সম্প্রদায়ের এক সদস্য ঈশ্বরাপ্পা ছিলেন এই বিয়ের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। পাত্র ও কন্যা, দুই পক্ষই তিনি। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আমার মা এই প্রথা সম্পর্কে আমাকে বলেছিলেন। কিন্তু যুবসমাজ তা ভুলতে বসেছে।” এটা বিশ্বাস করা হয়, যদি দুটি পুতুলের মধ্যে বিয়ে দেওয়া হয় তাহলে অরক্ষণীয়াদের বিয়ে হয়। ভাল বৃষ্টি হয়। মন্দ ভাগ্য দূরে সরে যায়। সেই কথা মাথায় রেখেই বিয়ের আসর সাজানো হয়। সমস্ত নিয়ম মেনে আচার অনুষ্ঠানও করা হয়।
[ OMG! এটিএমের ভিতর ১২ লক্ষ টাকার নোট কুচিকুচি করল ইঁদুর ]
গ্রামের অন্যতম প্রবীণ ব্যক্তি ইলাম্মাও বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বয়স হয়েছে তাঁর ৮৫ বছর। কিন্তু তাও বয়সের ভারে ন্যুব্জ হননি তিনি। গ্রামের এমন একটি অনুষ্ঠান, আর সেখানে তিনি যাবেন না, তাও কি হয়? তিনি বলেছেন, “আমি ছোটোবেলায় এসব দেখেছি। আমি আমার ছেলেমেয়েদের এই প্রথা সম্পর্কে বলি। ওরাও রাজি হয়ে যায়। গোটা সম্প্রদায়েই এই বার্তা ছড়িয়ে যায়।” আর তারপর? শুভস্য শীঘ্রম। টাপুর টুপুর বৃষ্টির সন্ধানে শিব ঠাকুরের নয়, দুই পুতুলের বিয়ে দিল হুবলি। সঙ্গে প্রার্থনাও করল, “আয় বৃষ্টি ঝেঁপে…।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.