সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: শ্লীলতাহানির অভিযোগে বিদ্ধ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আরও চাপে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তে ছাড়পত্র চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে জোরাল সওয়াল ‘নির্যাতিতা’র। রাজ্য সরকারও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে চেয়ে সওয়াল করল শীর্ষ আদালতে। যার প্রেক্ষিতে রাজ্য ও কেন্দ্রকে একযোগে নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনী আবহে গত ২ মে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠে। রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী দাবি করেন, রাজ্যপাল বোস (CV Ananda Bose) তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন। প্রথমে রাজভবনে থাকা পুলিশের কাছে একথা জানান তিনি। পরে থানায় গিয়ে একই দাবি করেন ওই মহিলা। তবে সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা এই ধরনের বিস্ফোরক অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও আইনি পদক্ষেপ করতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। তবে অনুসন্ধান চালানো হয়। রাজভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করে পুলিশ। এছাড়া ওই মহিলাকে পুলিশের দ্বারস্থ হতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজভবনেরই বেশ কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশ।
কিন্তু কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) ওই তদন্তে স্থগিতাদেশ জারি করে। তার ফলে শেষমেশ বন্ধই হয়ে যায় তদন্ত। হাই কোর্টের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ‘নির্যাতিতা’। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud) এবং বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে রাজ্য দাবি করে নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্তে ছাড়পত্র দেওয়া হোক।
নির্যাতিতার আইনজীবীও তদন্তের পক্ষে সওয়াল করেন। নির্যাতিতার বক্তব্য, সংবিধানের ৩৬১ ধারার দোহাই দিয়ে রাজ্যপাল ফৌজদারি মামলা থেকে পুরোপুরি অব্যাহতি পেতে পারেন না। কারণ সেক্ষেত্রে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত তদন্ত এগোবে না। যা আমার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। নির্যাতিতার ওই যুক্তি শোনার পরই সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে নোটিস পাঠায়। একই সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই মামলায় আদালতকে সহযোগিতা করতে। এই মামলায় কেন্দ্রকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি ৩ সপ্তাহ পর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.