সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খাতায়-কলমে দিওয়ালি আসতে এখনও অনেক দেরি। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের কানপুরের দেরাপুরের পারাউক গ্রামের বাসিন্দারা মেতে উঠেছেন দিওয়ালির আনন্দে। আর হবে নাই বা কেন? গ্রামের ছেলে যে এবার দেশের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী!
[এবার ভারতেই তৈরি হবে অত্যাধুনিক F-16 যুদ্ধবিমান]
প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পর দেশের রাষ্ট্রপতি কে হবেন, তা নিয়ে দেশ জুড়ে কৌতুহল ক্রমশই বাড়ছিল। রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণার জন্য এনডিএ-র ওপর চাপ বাড়াচ্ছিল বিরোধী দলগুলিও। শেষপর্যন্ত সোমবার এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে রামনাথ কোবিন্দের নাম ঘোষণা করেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা ৭১ বছর বয়সী রামনাথ কোবিন্দ এখন বিহারের রাজ্যপাল। উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সাংসদও মনোনীত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সালে পর্যন্ত বিজেপির দলিত মোর্চার সভাপতি ছিলেন কোবিন্দ। যদিও কোবিন্দকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস সহ সবকটি বিরোধী দল-ই। আগামী ২২ জুন রাষ্ট্রপতি পদে নিজেদের প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসছে বিরোধীরা। বস্তুত, রাষ্ট্রপতি পদে রামনাথ কোবিন্দকে সমর্থন না করার কথা জানিয়েছে এনডিএ শরিক শিবসেনাও। দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, ‘একজন দলিতকে রাষ্ট্রপতি করে কেউ যদি ভোট পাওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা কখনই তাঁকে সমর্থন করব না।’ রাষ্ট্রপতির মতো সাংবিধানিক পদ নিয়েও এনডিএ রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেছে নবীন পট্টনায়েকের বিজেডিও।
[গর্ভে অন্যের সন্তান, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই এই মায়েদের]
যদিও এইসব রাজনীতির কচকচানি নিয়ে বিশেষ মাথাব্যাথা নেই কানপুরের দেরাপুর পারাউক গ্রামের বাসিন্দাদের। রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে গ্রামের ছেলে রামনাথ কোবিন্দের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকে আনন্দে মেতে উঠেছেন তাঁরা। গ্রামে শুরু হয়ে গিয়েছে মিষ্টি বিতরণ, রামনাথ কোবিন্দের পৈত্রিক ভিটের পাশে মঞ্চ বেঁধে চলছে গান-বাজনা। রামনাথ কোবিন্দের ছোট বেলার বন্ধুর যশবন্ত সিং জানিয়েছেন, ‘আমাদের গ্রামের ছেলে রাষ্ট্রপতি পদপ্রাথী হিসেবে মনোনীত হয়েছে। যতক্ষণ না ভোটের ফল বেরোচ্ছে এবং তিনি দেশের রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রামে প্রার্থনা ও উৎসব চলবে।’
[সম্পত্তিতে আধার যোগের নির্দেশিকা গুজব, জানাল পিআইবি]
কানপুরের এই দেরাপুরের পারাউক গ্রামেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা রামনাথ কোবিন্দের। গ্রামেরই স্কুলে পড়তেন তিনি। এখন অবশ্য এই গ্রামে রামনাথ কোবিন্দের পরিবারের কেউই থাকেন না। কিন্তু তাতেও উৎসাহে এতটুকু ভাটা পড়েনি। যশবন্ত সিং বলেন, ‘আমরা একসঙ্গেই স্কুলে যেতাম। তখনকার দিন শিক্ষকরা খুবই কঠোর ছিলেন। পড়া না পারার জন্য প্রায় প্রতিদিন কাউকে না কাউকে শিক্ষকদের হাতে মার খেতে হয়। কিন্তু রামনাথ কোনওদিন স্কুলে মার খায়নি।’ গ্রামের স্কুলের রামনাথ কোবিন্দের থেকে এক বছরের সিনিয়র ছিলেন রাজকিশোর সিং। তিনি জানান, বিহারের রাজ্যপাল হওয়ার পর, একবার গ্রামে এসেছিলেন রামনাথ। সেবার নিজের পৈত্রিক বাড়িটিও দান করে যান তিনি। এখন সেখানে একটি কমিউনিটি হল তৈরি করা হয়েছে।
[মাথায় ঢুকছে না GST? বুঝিয়ে দেবেন বিগ বি]
জানা গিয়েছে, রামনাথ কোবিন্দের বাবা মাইকু লাল পেশায় ছিলেন পুরোহিত। ছোটবেলায় বেশ দারিদ্র্যের মধ্যে কেটেছে তাঁর। রামনাথের স্কুলের ফি জমা দেওয়ার মতোও আর্থিক সার্মথ্য ছিল না তাঁর বাবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.