ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিবাহবিচ্ছেদ হলে হিন্দু মহিলাদের মতোই মুসলিম মহিলারাও স্বামীর কাছে খোরপোশ দাবি করতে পারবেন। এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট (Suprme Court)। বুধবার বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন ও বিচারপতি অগাস্টাইন জর্জ মাসিহর বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। এদিনের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এই মামলায় জমা পড়া এক পিটিশন এদিন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
জানা গিয়েছে, এক মুসলিম (Muslim) ব্যক্তি ডিভোর্সের পর স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে চাননি। পারিবারিক আদালত তাঁকে মাসিক খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তিনি দ্বারস্থ হন তেলেঙ্গানার হাই কোর্টের। উচ্চ আদালতও একই রায় দিলে তিনি পিটিশন জমা দেন সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু শীর্ষ আদালতেও সেই পিটিশনকে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। আর এর পরই বিচারপতিরা জানিয়ে দিয়েছেন, ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারার উল্লেখ করে একথা জানিয়েছেন তাঁরা।
বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, মুসলিম মহিলা (বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার রক্ষা) আইন ১৯৮৬ ধর্মনিরপেক্ষ আইনের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে না। এদিন বিচারপতি নাগারত্ন বলেন, ”আমরা ফৌজদারি আবেদন খারিজ করে দিচ্ছি। সেই সঙ্গে এই সিদ্ধান্তে আসছি যে ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা সমস্ত মহিলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কেবল বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রেই নয়।” সেই সঙ্গেই তিনি আরও বলেন, ”অনেক স্বামীরা বুঝতেই পারেন না যে তাঁদের স্ত্রী, যাঁরা গৃহবধূ, তাঁদের উপরে মানসিক দিক থেকে কতটা নির্ভরশীল। সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের গৃহবধূদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার।”
প্রসঙ্গত, এই রায়ের তাৎপর্য বোঝার জন্য ১৯৮৫ সালের শাহ বানো মামলাকে ফিরে দেখা দরকার। এই যুগান্তকারী রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, ধর্মমত নির্বিশেষে। কিন্তু মুসলিম মহিলা (বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার রক্ষা) আইন ১৯৮৬ আইনে তার প্রভাব লঘু কমে যাচ্ছিল বলে মত ছিল ওয়াকিবহাল মহলের। সেখানে বলা হয়েছিল, মুসলিম মহিলারা কেবলমাত্র ইদ্দতের (অর্থাৎ বিবাহবিচ্ছেদের তিন মাস পরে) পরই। ২০০১ সালে সুপ্রিম কোর্ট ১৯৮৬ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা বহাল রাখে। তবে জানিয়ে দেয়, একজন পুরুষ তাঁর বিবাহবিচ্ছিন্না স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে বাধ্য, যতক্ষণ না তাঁর ফের বিয়ে হচ্ছে বা তিনি উপার্জনক্ষম হচ্ছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.