সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হীরকদ্যুতিও শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারল না। প্রায় আড়াই দশক পর পুলিশের জালে ধরা পড়তেই হল কুখ্যাত হীরে পাচারকারী পরেশ জাভেরিকে। চোরাচালানের তদন্তে নেমে শুক্রবার মুম্বইয়ের ইডি অফিসাররা তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করেন। সূত্রের খবর, ১৩০ কোটি টাকা মূল্যের হীরে পাচারের ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড এই পরেশ জাভেরি, যার আসল নাম হরিশ কল্যাণদাস ভাবসার। তাকে হেফাজতে নিয়ে বিস্তারিত জানতে চায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টকরেট (ED)।
পরেশ জাভেরির এই বেআইনি কাজের সূত্রপাত সেই ১৯৯৭ সালে। মুম্বইতে তাদের পারিবারিক রত্নের ব্যবসা ছিল। তার জন্য বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ হীরে, সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান রত্ন আসত। পরেশ এবং তার ভাইয়ের হাত ধরে মুম্বইয়ের বিভিন্ন দোকানে তা পৌঁছে যেত। সেসবের অবশ্য খাঁটি হিসেবনিকেশ ছিল শুল্ক দপ্তরের কাছে। তবে একবার এদের কাছে ১৩০ কোটি টাকার হীরে কেনার বরাত আসে। সেটাই বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এত টাকার লোভ সামলাতে পারেনি পরেশ।
পরেশ এবং তার ভাই এত টাকার বরাত পেয়ে স্থির করে, শুল্ক দপ্তরে এই লেনদেনের হিসেব না দেখালে গোটা টাকাই নিজেদের হাতে আসবে, ফলে সহজেই অনেক সম্পদশালী হওয়া যাবে। ফলে শুল্ক দপ্তরকে ফাঁকি দিয়ে এত টাকা আত্মসাৎ করে দু’ভাই। কিন্তু আইনরক্ষকদের চোখে ফাঁকি দিতে পারেননি তারা। সঙ্গে সঙ্গে চোরাচালানকারী হিসেবে পুলিশের খাতায় নাম ওঠে পরেশ জাভেরি এবং তার ভাইয়ের। ভাই ধরা পড়ে যায় সেসময়েই। পুলিশের চোখ এড়িয়ে পরেশ পালিয়ে যায় সিঙ্গাপুর। সেখানে নতুন ব্যবসা শুরু করে বহাল তবিয়তেই ছিল। ভেবেছিল, পুলিশের জালে ধরা পড়বে না।
কিন্তু বিধি বাম। হীরেও ভাগ্য ফেরাতে পারল না পরেশ জাভেরির। ১৩০ কোটি টাকা হীরে পাচারের মতো হাইপ্রোফাইল মামলার তদন্তভার ইডি’র (Enforcement Directorate) হাতে যায়। লুকআউট নোটিস জারি হয়। ২৩ বছর পর দুঁদে ইডি আধিকারিকদের দক্ষতায় শেষমেশ গোপন গুহা থেকে অপরাধী বেরিয়ে পড়ে। এবার তাকে হেফাজতে নিয়ে ১৩০ কোটির হিসেব মেলানোর পালা। এই বেআইনি ব্যবসার সঙ্গে আরও কারা জড়িত, তারও খোঁজ চলবে পরেশকে জেরা করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.