সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরনো জৌলুস ফিরে পেতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেননি একনাথ শিণ্ডে। তবে শত চেষ্টা করেও পাকাল মাছের মত ফসকে গিয়েছে ভিভিআইপি ‘মুখ্যমন্ত্রী’ আসন। অভিমান, রাগ এমনকি হুঙ্কারেও কোনও ফল হয়নি। অতঃপর না পাওয়ায় দুঃখকে ছাই চাপা দিয়ে মহারাষ্ট্রে এনডিএর সাজানো সংসারে মানিয়ে নেওয়ার পথেই হাঁটছিলেন ‘বিবাগী’ শিবসেনা প্রধান। এবার সেই যন্ত্রণাতেই ‘পিন ফোটালেন’ এনডিএর আর এক শরিক এনসিপির অজিত পাওয়ার। খোঁচা খাওয়া শিণ্ডের ‘চুন’ হয়ে যাওয়া মুখ দেখে মুচকি হাসলেন মুখ্যমন্ত্রী ফড়ণবিস।
উদ্ধব শিবির থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর একনাথ শিণ্ডের লক্ষ্য ছিল বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নয়া সরকার গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার। প্রথম দফায় সে উদ্দেশ্য তাঁর সফলও হয়েছিল। কথা ছিল, ২৪-এর বিধানসভা নির্বাচন জয়ের পরও শিণ্ডেই থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ভোটের ফলাফল সব ওলটপালট করে দিয়েছে। বিজেপি বেশি আসন পেয়ে যাওয়ায় একনাথ শিণ্ডে এখন ব্যাকফুটে। মুখ্যমন্ত্রীর কুরসি গিয়েছে মোদ-শাহদের প্রিয় পাত্র দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের কাছে। পদ খুইয়ে অভিমানী শিণ্ডে না পারছেন দুঃখের কথা কাউকে বলতে, না পারছেন যন্ত্রণা গিলতে। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বসেও কাজে বিশেষ মন নেই তাঁর। প্রায়ই চলে যান গ্রামের বাড়ি। যা নিয়ে এনডিএ শিবিরে কানাঘুষোও চলে খুব।
এহেন পরিস্থিতির মাঝেই ৩ মার্চ থেকে মহারাষ্ট্রের শুরু হতে চলেছে বাজেট অধিবেশন। সেই উপলক্ষে বহুদিন পর রবিবার একসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন মহারাষ্ট্রের তিনমূর্তি দেবেন্দ্র ফড়ণবিশ, একনাথ শিণ্ডে ও অজিত পাওয়ার। সেখানেই শিণ্ডে বলেন, “আগামীকাল থেকে বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সরকার গঠনের পর এটাই আমাদের প্রথম বাজেট। মহাজুটির নয়া সরকার কাজ শুরু করলেও টিম এখনো একই আছে। বিধানসভায় শুধুমাত্র আমাদের দুজনের (শিণ্ডে ও ফড়ণবিস) আসন বদল হয়েছে। অজিত পাওয়ারের আসন যা ছিল তাই আছে।” শিণ্ডের মুখ থেকে এমন কথা শুনে খোঁচা দেওয়ার সুযোগটা ছাড়েননি পাওয়ার। পাল্টা বলেন, ”আপনি চেষ্টা করেও নিজের কুরসি ধরে রাখতে পারেননি, সে দোষ কি আমার?”
সামান্য ইস্যুতে প্রকাশ্যে অজিতের কাছে এমন খোঁচা খেয়ে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যান শিণ্ডে। জোর করে মুখে হাসি টেনে বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাঁর মুখে স্পষ্ট ধরা পড়া যন্ত্রণার ছবি। সাংবাদিক বৈঠকের বাকি সময় থমথমে মুখে বসে থাকতে দেখা যায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। ধাক্কা খেলেও মুখে অবশ্য শিণ্ডে বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। মহারাষ্ট্রে ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল সরকার চলছে।’ মারাঠা রাজনীতিতে শিণ্ডের এমন দুর্দশা দেখে নিন্দুকেরা অবশ্য বলছেন, ‘হাতি কাদায় পড়লে ব্যাঙেও ছাড়ে না।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.