সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসমে জলস্তর বাড়ছে ক্রমশ। অসমের কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের ৭০ শতাংশ এলাকা পুরোপুরি জলের তলায়। ইতিমধ্যেই ৫৮টি বন্যপশুর মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বিপন্ন প্রজাতির বহু প্রাণী।
অধিকাংশই হয় জলে ভেসে গিয়েছে নয় গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছে। জল থেকে বাঁচতে এবার লোকালয়ে চলে আসছে বন্য জন্তুরা। তৈরি হয়েছে নতুন সমস্যা। বাড়ছে চোরাশিকারিদের সক্রিয়তা। লোকালয়ে চলে আসার ফলে বন্য পশুদের শিকার সহজ হচ্ছে বলে জানাচ্ছে বনদপ্তর। কাজিরাঙ্গা অভয়ারণ্যের ডিরেক্টর জানাচ্ছেন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে তিনটি এক শৃঙ্গ গন্ডার, ৪৫টি হরিণ, বেশ কয়েকটি বুনো মোষ। ১০৮টি পশুকে উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের চিকিৎসা চলছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর জল আর না বাড়লে, এই সপ্তাহের শেষে কাজিরাঙ্গা থেকে জলস্তর নামবে বলে আশা করছেন তিনি। তবে টানা বৃষ্টি হলে, সে সম্ভাবনা কম বলেও জানান জাতীয় উদ্যানের ডিরেক্টর। চোরাশিকারিদের রুখতে যে সব ক্যাম্প এখানে গড়ে তোলা হয়েছিল, সেইসব ক্যাম্পের কর্মীদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গিয়েছে বনদপ্তর। নজরদারি চালাতে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন।
জলের নিচে চলে গিয়েছে এই রাজ্যের ২৪টি জেলা। শুধু অসমে জলে ডুবে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অরুণাচলে একই পরিবারের ১৪ জন ধসে চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন। বন্যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ১৭ লাখের বেশি মানুষ। অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল বন্যা-আক্রান্ত মাজুলি পরিদর্শন করেন। ঘুরে দেখেন কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের অবস্থাও। কথা বলেন বন দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে যে এখন পর্যন্ত মোট ২৯৪টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৩১ হাজারেরও বেশি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১,৭৬০ হেক্টর শস্য। ন’গাঁও, গোলাঘাট, কার্বি আংলং, সোন্তিপুর এবং বিশ্বনাথ, এই পাঁচটি জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের, বন্যপশুদের গতিবিধি নিয়ে বন দপ্তরের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অরুণাচল প্রদেশও। বন্যা ও ভূমিধসে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অরুণাচলের রাজধানী ইটানগর। অরুণাচল পরিদর্শন করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু-সহ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। রিজিজু জানান প্রাথমিক স্তরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আধা সামরিক বাহিনী পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.