সোম রায়, নয়াদিল্লি: ২ থেকে এক লাফে ১৮। আশা করা গিয়েছিল,বাংলা থেকে এবার বাড়বে মন্ত্রীর সংখ্যা, ওজনদার হবে পূর্বতন মন্ত্রীদের প্রোফাইল৷ তবে বৃহস্পতিবার শপথ অনুষ্ঠান সে আশায় জল ঢেলে দিল৷ নরেন্দ্র মোদি ২.০ মন্ত্রিসভার প্রথম দফায় পশ্চিমবঙ্গ পেল না কোনও পূর্ণমন্ত্রী। বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরি, দু’জনই শপথ নিলেন প্রতিমন্ত্রী হিসাবে। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদির প্রথম ইনিংসে মন্ত্রিত্ব করেছিলেন বাবুল। এবারও তিনি মন্ত্রী হবেন, তা প্রায় নিশ্চিত ছিল। তবে অনেকেরই আশা ছিল, এবার হয়তো তাঁকে পূর্ণমন্ত্রী করা হতে পারে।
[আরও পড়ুন: এখনই গ্রেপ্তার করা যাবে না, হাই কোর্টের নির্দেশে সাময়িক স্বস্তি রাজীব কুমারের]
বাংলা থেকে প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়া দেবশ্রীও মন্ত্রিত্বের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন। রায়গঞ্জে মহম্মদ সেলিম ও দীপা দাশমুন্সির মতো দুই হেভিওয়েট নেতাকে হারানোর জন্য। বহু আন্দোলনে দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য বিজেপির চেনা মুখ। উত্তরবঙ্গের সাংসদ,মহিলা প্রতিনিধি। দেবশ্রীর হয়ে কাজ করেছে এতগুলি ফ্যাক্টর। তা সত্বেও মন্ত্রিত্ব মিলল না৷
মন্ত্রী তালিকা নিয়ে এবার চূড়ান্ত গোপনীয়তা বজায় রেখেছিল বিজেপি। অবস্থা এমন ছিল, বাংলা থেকে আসা সাংসদদের অনেককেই পরিচিত মহল থেকে নিজের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল কিনা, সেই খোঁজ নিতে দেখা যায়। বুধবার সন্ধ্যায় পাওয়া ইমেল ও হোয়াটসঅ্যাপে আশা দেখতে পেয়েছিলেন রাজ্যের সাংসদরা। তবে সেই বার্তায় বলা হয়, সকাল আটটার মধ্যে পৌঁছতে হবে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সমাধিস্থলে। এরপর থেকে অনেকেই ফোনের আশায় বসেছিলেন। অবশেষে দুপুরের দিকে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের ফোন আসে দুই সাংসদের কাছে। বলা হয়, তাঁরা মন্ত্রিত্ব পেতে চলেছেন। সাড়ে চারটের সময় নিজের বাড়িতে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী। ফোন পেয়েই বঙ্গভবনে ছোটেন দেবশ্রী। দ্রুত সব কাজ সেরে ফেলেন। তার মাঝেই বলেন, “দিনাজপুরের মানুষের কষ্ট কাছ থেকে দেখেছি। তবে শুধু নিজের কেন্দ্র রায়গঞ্জ নয়, গোটা বাংলার উন্নতি করাই আমার লক্ষ্য। নিজের সর্বস্ব দিয়ে কাজ করব। একটা কথাই বলব, নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহর নজর শুধু বাংলার আসন জেতাই ছিল না। তাই প্রচারে যতটা গুরুত্ব দিয়েছেন, ততটাই জোর দিয়েছেন নির্বাচন পরবর্তী সময়েও। বাংলার কর্মহীনদের কষ্ট, দারিদ্রের জ্বালা, জীবনযন্ত্রণা, অনিশ্চিত জীবন সব দেখেছেন। আমাদের মাধ্যমেই ওঁরা এগুলো মেটাবেন।”
এদিন সকালে রাজধানী আসেন গত দেড় বছরে ‘রাজনৈতিক সংঘর্ষে’ নিহত বিজেপি কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা। কারও হাতে ছিল ‘শহিদ’ স্বামীর ছবি, কেউ আবার মোবাইলে দেখাচ্ছিলেন নিহত বাবার সঙ্গে তাঁর ছবি। কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থীর হাত ধরে রাজধানী এক্সপ্রেস থেকে নামতে দেখা গেল ১৭ মে নিহত হারাধন মিদ্দার ছেলে, ভাই এবং জয়দেব প্রামাণিকের পরিবারের সদস্যদের। দিল্লি এলেন দাড়িভিটে নিহত দুই ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের মা। এদিকে ৫৪ জন ‘শহিদ’ পরিবারের সঙ্গে একই ট্রেনে এসেছেন পুলওয়ামায় নিহত সুদীপ বিশ্বাস ও বাবলু সাঁতরার পরিবারের সদস্যরা। রাজনৈতিক হিংসায় খুন হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর স্বামীকে গুলিয়ে ফেলায় বিরক্ত বাবলু সাঁতরা স্ত্রী মিতা বলেন, “আগে যদি জানতাম, তাহলে আসতামই না।”
[আরও পড়ুন: দলে কেন মনিরুল? বীরভূমে গণইস্তফার হুমকি বিজেপি নেতা-কর্মীদের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.