সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৮ নভেম্বর ২০১৬। দেশবাসীকে অন্ধকারে রেখে এসেছিল এক আকস্মিক ঘোষণা। বাতিল করা হল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সে ঘোষণা কাঁপিয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। কেউ বলেছিলেন, কালো টাকার রমরমায় এবার লাগাম পড়বে। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই আবার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। শুরু হল দেদার রাজনৈতিক চাপানউতোর। আর সাধারণ মানুষের চরম হেনস্তার অধ্যায়। দেখতে দেখতে সে ঘটনা বর্ষপূর্তির দিকে এগিয়ে চলেছে। আর তার প্রাক্কালে প্রতিবাদে সরব হলেন নেটিজেনরা। #Nov8BlackDay হ্যাশট্যাগ দিয়ে দিনটিকে ভারতীয় অর্থনীতির কালোদিন ঘোষণার ডাক নেটিজেনদের একাংশের।
The day that pushed country into dark#Nov8BlackDay pic.twitter.com/4jxDBHTSJU
— Devashish Jarariya (@jarariya91) October 21, 2017
নোটবাতিল ভারতীয় অর্থনীতিতে নিঃসন্দেহে সবথেকে বড় সিদ্ধান্ত তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রধানত উদ্দেশ্য ছিল দুটি। এক, কালো টাকার দৌরাত্ম কমানো। দ্বিতীয়ত, সন্ত্রাসীরা ভারতীয় টাকা জাল করে নেটওয়ার্ক বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছিল। সেই কাজে ধাক্কা দেওয়া। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত এই দুই উদ্দেশ্যকেই গ্রহণযোগ্য মনে করেছিল দেশবাসী। যদিও ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে রাতারাতি নোটবাতিল হলে যে কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, হেনস্তা স্বীকার করতে করতে তা বুঝে গিয়েছিল দেশবাসী। স্রেফ নোট বদলানোর লাইনে দাঁড়িয়েই মৃত্যু হয় বহু মানুষের। যদিও সে সংখ্যা প্রায় চাপা পড়ে যায় কালো টাকা উদ্ধারের বিপুল প্রত্যাশায়। কিন্তু সঠিক অর্থে ধাক্কা লাগে যখন চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধি ধাক্কা পায়। প্রায় বছর ঘুরতে চলেছিল, তবুও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক নোট ফেরতের হিসেব দিতে পারছিল না। পরে যা হিসেব মিলল, তাতে দেখা গেল প্রায় অধিকাংশ বাতিল নোটই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘরে ফিরে গিয়েছে। এর দুটি অর্থ হতে পারে। এক, কালো টাকার প্যারালাল ইকোনমি বলে দেশে আদৌ কিছুই ছিল না। নয়, সমস্ত কালো টাকাই ঘুরপথে সাদা হয়েছে। সেল কোম্পানি বা অস্তিত্বহীন ভুয়ো কেম্পানির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন বা জনধন যোজনার অ্যাকাউন্টে আকস্মিক মুদ্রাস্ফীতি এসবের ইঙ্গিত দিয়েছে যথেষ্ট। ফলে উঠেছে সঙ্গত প্রশ্ন। তাহলে নোট বাতিল করে কী লাভ হল? এত হেনস্তা, এত মৃত্যু মেনে নিয়ে অর্থনীতির কোন মাইলস্টোনে পৌঁছতে পারল দেশ? এই ক্ষোভ আর চাপা থাকেনি। নোট বাতিলের বর্ষপূর্তি যখন আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা, তখন প্রতিবাদে সোচ্চার নেটদুনিয়া।
black day The day when the economy started to down fall with high speed ..#Nov8BlackDay pic.twitter.com/Wh1uY1f1BQ
— VJ Armaan (@Mehboobp1) October 21, 2017
Dear @narendramodi indian economy is not a practise lab for your experiments
You doomed us with#DeMonetisationDisaster #Nov8BlackDay— Devashish Jarariya (@jarariya91) October 21, 2017
When @narendramodi did the DeMonetisation last year, he told us black money will end~ Well he was right, it all got converted. #Nov8BlackDay
— Tehseen Poonawalla (@tehseenp) October 21, 2017
রাজনৈতিক বিরোধিতা ছেড়ে দিলেও, অর্থনীতিবিদদের বড় অংশ বারবার জানিয়েছিলেন যে, নোট বাতিলে ভারতের মতো দেশে বড় কোনও লাভের মুখ দেখতে পারে না। বরং এর জেরে অসংগঠিত ক্ষেত্রগুলি ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে। যদিও সে সময় নানা ব্যঙ্গের মুখে পড়তে হয়েছিসল অমর্ত্য সেনের মতো নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকেও। দেশের মঙ্গলে তাঁর অবদান নিয়ে পালটা প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। খোঁচা দিতে ছাড়েননি খোদ প্রধানমন্ত্রীও। হার্ভার্ডের থেকে হার্ড ওয়ার্ক জরুরি বলে এই ধরনের সমালোচনায় জল ঢেলেছিলেন। আর রাজ্যস্তরের নেতারা তো অমর্ত্য সেনকে চাটুকার বলতেও ছাড়েননি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, নোট বাতিল ভারতীয় অর্থনীতির শিরদাঁড়াকে মজবুত তো করেইনি, উলটে অনেকটাই ফোঁপরা করে দিয়েছে। কেননা কালো টাকা উদ্ধার প্রায় হয়নি। উলটে একের পর এক নতুন নোট চালু, নিয়মের বদল ইত্যাদির কারণে প্রতিনিয়ত হেনস্তা হতে হয়েছে দেশবাসীকে। এর উপর সময় না দিয়ে চালু হয়েছে জিএসটি। তারও আবার নিয়ম বদল হয়েছে। কখনও দুর্নীতি দমন লক্ষ্য বলে ঘোষিত হয়েছে, কখনও আবার নির্বাচন বৈতরণীকে পেরনোকে লক্ষ্য করার অভিযোগ উঠেছে। এ বছরের নোবোলজয়ী অর্থনীতিবিদ রিচার্ড থেলার প্রথমে নোট বাতিলকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। ক্যাশলেস ইকোনমির এই সূচনা তাঁর মনঃপুত হয়েছিল। কিন্তু আরও বড় নোট এনে সে সবে জল ছেলে দেওয়া হয়েছিল। সেই হতাশাও তিনি ব্যক্ত করেছিলেন। বস্তুত যে ‘নাজ থিওরি’ এ বছর বিশ্বে স্বীকৃতি পেল, ভারতের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত যেন তারই পরিপন্থী। সব মিলিয়ে গত এক বছর যেন ভারতবাসীর কাছে এক ধোঁয়াশাময় পর্ব। আর তাই ৮ নভেম্বরকে কালোদিবস ঘোষণা করার ডাক। খানিকটা ব্যঙ্গ, খানিকটা সিরিয়াস হয়েই নেটিজেনরা জানান দিচ্ছেন তাঁদের প্রতিবাদের ভাষা।
#Nov8BlackDay damaged r economy more than any foreign invasion could
Wonder who @narendramodi actually works for?@Stupidosaur yr cue here 😂— Preeti Sharma Menon (@PreetiSMenon) October 21, 2017
We are waiting for modi ji’s 50 days time line to end #DeMonetisationDisaster #Nov8BlackDay pic.twitter.com/Iga2cy3Dw0
— Devashish Jarariya (@jarariya91) October 21, 2017
Mark 8th November as Black Day for Indian Economy. We will raise our voice against DeMonetisation #Nov8BlackDay@Shehzad_Ind @tehseenp
— Vinay Kumar Dokania (@vinaydokania) October 21, 2017
#Nov8BlackDay You can fool all the people some of the time & some of the people all the time BUT you cannot fool all the people all the time pic.twitter.com/isR5a2BeXi
— Athif 🇮🇳 (@Athif) October 21, 2017
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.